কানাডা পুলিশের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অলোক মুখার্জী
যে-কোনো দেশের উন্নতিতে পুলিশের ভূমিকা অপরিসীম। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের দায়-দায়িত্ব থাকে অনেক বেশি। যে-কোনো দেশের বড় শহরগুলিতে পুলিশ প্রধানের কাজ বেশ জটিল। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বহির্বিশ্বে বাঙালির যথেষ্ট সুনাম আছে। যেমন বর্তমানে নীল বসু স্কটল্যান্ডের সন্ত্রাস দমন শাখার প্রধান। ইউ.কে. এর লন্ডন, কেমডেন, আমেরিকার কয়েকটি শহর এমনকি নেদারল্যান্ডেও মেয়র হয়েছেন বাঙালি, ভোটেও লড়েছে বাঙালি।
এরকমই আর একটি উদাহরণ হলো অলোক মুখার্জী যিনি কানাডার টরেন্টো পুলিশ সার্ভিস বোর্ডের (টি.এস.বি.পি) সহ-প্রধান হয়েছিলেন। ২০০৪ সালে তিনি টরেন্টো পুলিশ বোর্ডের সহ-প্রধান হন। ২০০৫ সালে তিনি পুলিশ-প্রধান হন দুই বছরের জন্য। ২০০৭ সালে তিনি আবার এই পদের জন্য পুনরায় নিযুক্ত হন ২০১০ পর্যন্ত। ২০১০ এবং ২০১৩ তেও তিনি পুনরায় নিযুক্ত হন। ২০১৫ সালে তিনি স্বেচ্ছাবসর নেন। টরেন্টো পুলিশ কমিশনার হিসেবে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময়কালের জন্য নিযুক্ত ছিলেন। চার্লস ও.বিক ওনার চেয়ে বেশি সময়কাল ধরে এই পদে থাকতে সমর্থ্য হয়েছিলেন। রিটায়ার্ডের পরও তিনি কর্মদক্ষতার জন্য সমগ্র কানাডা পুলিশের কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েন অফ পুলিশ বোর্ডের (সি.এ.বি.পি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েন অফ পুলিশ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি কানাডা সরকারের এম.পি. হন, তাঁর কাজের জনপ্রিয়তার কারণে তিনি জয়লাভ করতে সমর্থ্য হন।
টরেন্টো শহরের পুলিশের সংস্কার নিয়ে তিনি একটি বইও লেখেন 'একসেসিভ ফোর্স: টরেন্টোস ফাইট টু রিফর্ম সিটি পলিশিং উইথ টিম হার্পার'। ২০১০ সালে টরেন্টোয় জি.টোয়েন্টি সামিট চলাকালীন স্যামি ইয়াটিম নামে একজন ১৮ বছরের ছেলেকে সুইচব্লেড নাইফ (এক প্রকার ফোল্ডিং ছুরি) হাতে দেখা গেলে জেমস ফর্সিলো নামে এক পুলিশ অফিসার নিয়মের তোয়াক্কা না করে ৯ টি গুলি করে স্যামি ইয়াটিমকে হত্যা করে। যে হত্যাকান্ডটি গোটা কানাডা জুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছিল। সেই বিতর্কিত ঘটনার পর থেকে কিভাবে তিনি টরন্টো পুলিশের সংস্কার করেন তা নিয়েই লেখা বই। ঐ পুলিশ অফিসারের ৬ বছরের জেল হয়। এর পর থেকে তিনি কানাডা পুলিশের নিয়মকানুনের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন।
তিনি ১৯৭১ সালে পড়াশোনার জন্য ভারত থেকে কানাডা যান। ২০০৪ সালে তিনি ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি রিয়ার্সন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর। এছাড়াও তিনি টরেন্টোর মেয়র ডেভিড মিলারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছিলেন। কানাডায় ওনার এই কৃতিত্ব সারা বাংলার বাঙালির কাছে গর্বের।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment