Header Ads

বাসে চেপে হাতেখড়ি, ধনেখালির অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র যখন একটি বাস


শিশুদের চঞ্চল মন। খেলার জগতে সর্বদা ডুবে থাকতে পছন্দ করে শিশুরা। কোনো রকম অতিরিক্ত চাপ তারা সহ্য করতে পারে না। বেশিরভাগ শিশু প্রতিদিন স্কুলে যেতে চায় না। স্কুল পাঠানোর জন্য তাদের প্রচণ্ড জোর করতে হয়। স্কুল যাবার সময় শিশুরা কান্নাকাটিও করে। কিন্তু শিশু হলেও লেখাপড়া করে বড়ো তো হতেই হবে। তাই শিশুমনের বিকাশ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। 


শিশুদের স্কুলের প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে এবার ধনেখালিতে এক অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হলো। ধনেখালির দশঘরা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদপুরের মাঠে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার সেজে উঠেছে নতুন রূপে। গত এক বছর ধরে সেন্টারের প্রতি শিশুদের আকর্ষণ শুধু নয়, পাঠ নেবার চাহিদাও বেড়েছে বহুগুণ। সরকারি প্রকল্পের খরচে তৈরি হয়েছে এই সেন্টার। ২০২০ সালে এগারো লক্ষ টাকায় তৈরি হয়েছে এই সেন্টার। অন্য সমস্ত সেন্টারের থেকে এই সেন্টারের আকর্ষণ আলাদা হওয়ার কারণ হলো অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি গড়ে তোলা হয়েছে আস্ত একটি বাসের আদলে। 

দূর থেকে মনে হবে দশঘরার মাদপুরের মাঠে এই বাসটা এলো কোথা থেকে ভাবতে পারেন অনেকেই৷ আসলে এটা কোনো বাস নয়, বাসের আদলে কেবল বাড়িটি বানানো। খুদে শিশুদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী করে তুলতে এমন উদ্যোগ গৃহীত হয়। যা বানানোর পর থেকেই শিশুদের চাহিদা বাড়ছে। ১২ মিটার লম্বা ও ৪ মিটার চওড়া জায়গায় প্রায় ৩৫ জনের আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসের মধ্যে প্রবেশ করলেই দেখা মিলবে চক, ডাস্টার ও বোর্ডের। 

গত কয়েক বছর ধরে এ রাজ্যে স্কুলছুট পড়ুয়াদের সংখ্যা কমছে রাজ্যের প্রশাসন একগুচ্ছ অভিনব উদ্যোগ নিচ্ছে বলে। জেলায় জেলায় এমনও বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিংবা গ্রামবাসীরাও স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে একাধিক উদ্যোগ নিচ্ছে। মাদপুরের এই বাসরূপী অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের ভেতরের চার দেওয়াল মুড়ে ফেলা হয়েছে ছবি-ছড়াতে। সপ্তাহে ছয়দিন নিয়ম করে খুদে শিশুদের অ,আ,ক,খ এবং A,B,C,D পড়ানো হয়৷ বাসের পিছনে বানানো হয়েছে একটি রান্নাঘরও যেখানে পড়াশোনার শেষে শিশুদের পেট ভরে খাবার খাওয়ানো হয়। 

মাদপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সকল অভিভাবক-অভিভাবিকারা তার শিশুকে এখন বলে থাকেন-- "চল একটু মাদপুরের বাসে ঘুরে আসি।" যা বলামাত্রই শিশুরা দৌড়ে পৌঁছে যায় সেখানে। মাদপুরের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আগামীদিনে হয়ে উঠতে পারে দেশের রোল মডেল। 

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments