সংরক্ষণের অভাবে আজ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে বহড়ুতে অবস্থিত হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানে আজও বাঙালি বিভোর। তাঁর গানে লুকিয়ে ছিল কতই না গভীরতা। সুরের ভুবনের এক মহীরুহ হয়ে বাঙালির হৃদয়ে তিনি গেঁথে রয়েছেন। বাংলা সঙ্গীত জগতকে তিনি অনেক কিছুই দিয়েছেন। বাংলা ভাষার প্রসারের জন্য তাঁর গানের এক অনন্য ভূমিকা ছিল। তিনি আমাদের গানে গানে মাতিয়ে রাখলেও আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি তাঁর পৈতৃক ভিটেকে।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের শৈশব কেটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বহড়ু গ্রামে অবস্থিত তাঁর পৈতৃক ভিটেতে৷ এখন সেই পৈতৃক ভিটেটির কোনো অস্তিত্বই নেই। আগাছা ও ঝোপের জঙ্গলে ঢেকে গেছে পুরো বাড়ি৷ মাঝখান দিয়ে সরু রাস্তা ধরে এগোলে পড়ে আছে কতগুলো ইট৷ বাড়িটির এহেন অবস্থা দেখলে যেন মায়া পড়ে যায়। একসময় যে বাড়িতে এক তারকার বসবাস ছিল, সেই বাড়ি আজকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত৷
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে চাইলে সরকার সংরক্ষণ করতে পারতো কিন্তু এই ভিটেটিকে সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নিতে কাউকে এগিয়ে আসতে সেভাবে দেখা যায়নি৷ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষও পেরিয়ে গেছে তবুও তাঁর পৈতৃক ভিটেটিকে সংস্কার করা হলো না। এক মহান সঙ্গীতশিল্পীর এই ভিটে হেরিটেজ তকমা পাওয়ারও যোগ্য। বাড়িটি সংরক্ষণই যখন হয়নি তখন হেরিটেজ তকমা পাওয়া সে-তো অনেক দূর।
বছরখানেক আগে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের নামে তাঁর শৈশবকালের স্কুল বহড়ু উচ্চবিদ্যালয়ের একটি ব্লকের নাম রাখা হয়। কেবল এটুকুই করা হয়েছে। আর হেমন্তের পৈতৃক ভিটেতে আজ তাঁর স্মৃতিচিহ্ন বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। কিছু অংশ আবার বেআইনি দখল অথবা বিক্রি হয়ে গেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গ্রামবাসীদের কথায়, ২০১৯ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষে বহড়ুর প্রাচীন শ্যামসুন্দর লাইব্রেরি তাঁদের নিজস্ব উদ্যোগে লাইব্রেরির অন্দরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটি আবক্ষ মূর্তি বসিয়েছে। গ্রামবাসী হিসেবে তাঁরা চান, বহড়ু স্টেশনে তাঁর নামাঙ্কিত স্মৃতি ফলক, তাঁর জন্মভিটায় শিশুদের পার্ক, মিউজিয়াম ও মূর্তি স্থাপন করতে৷ যাতে সঙ্গীতপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী বহু মানুষ বহড়ুতে এসে হেমন্তবাবুর বসত ভিটেকে দেখে যেতে পারেন৷
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment