Header Ads

আই এনএসএ ইয়ং সায়েন্টিস্ট- ২০২০ সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন বাংলার কুতুবউদ্দিন মোল্লা


ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লির ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি আই এনএসএ ইয়ং সায়েন্টিস্ট মেডেল- ২০২০ প্রাপকদের যে নাম ঘোষিত হয়েছে সম্প্রতি সেই তালিকায় আছেন বাংলার তরুণ বিজ্ঞানী ড. কুতুবউদ্দিন মোল্লা। তিনি উত্তর ২৪ পরগণার মিনাখাঁর জয়গ্রামের বাসিন্দা ও জয়গ্রাম জানকীনাথ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। 


কয়েকদিন আগে কুতুবউদ্দিন আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পোস্ট-ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করে বাড়ি ফিরেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিল্লির জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি এই পুরস্কার মূলত প্রদান করে থাকে ৩৫ বছর ও তারও কম বয়সী তরুণ বিজ্ঞানীদের। একজন তরুণ বিজ্ঞানীর প্রতিশ্রুতি, সৃজনশীলতা এবং শ্রেষ্ঠত্বের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয় এই পুরস্কার। প্রতি বছর সারা ভারত থেকে এই গুণাবলীর জন্য বাছাই করা হয় তরুণ বিজ্ঞানীদের। এ বছরের পুরস্কার প্রাপকদের ভূষিত করা হবে একটি পদক, শংসাপত্র এবং এক লক্ষ ভারতীয় মুদ্রা প্রদান করে। কুতুবউদ্দিন মোল্লা বর্তমানে ওড়িশার কটকে  আইসিএআর জাতীয় ধান গবেষণা কেন্দ্রে বিজ্ঞানী হিসাবে কর্মরত আছেন। 

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিনি পিএইচডি করেছেন। তিনি আমেরিকার পেনসিলভেনিয়াতে দুই বছর ধরে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করার জন্য মর্যাদাপূর্ণ ফুলব্রাইট নেহেরু ফেলোশিপ অর্জন করেন। আর এবার তিনি ইয়ং এনএসএ সায়েন্টিস্ট- ২০২০ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন। তিনি এই সম্মান পাচ্ছেন উদ্ভিদ জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এবং জিনোম এডিটিং ক্ষেত্রে গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য। তাঁর গবেষণা রোগ প্রতিরোধী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের উপযোগী উন্নত জাতের ধান তৈরিতে সহায়তা করবে। এছাড়াও এই গবেষণার ফলাফল বিশ্ব খাদ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। 

কুতুবউদ্দিনের এতোবড়ো সাফল্য লাভ করা অত্যন্ত কঠিন ছিল। তিনি একজন প্রত্যন্ত গ্রামের নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাঁর বাড়িতে নানান আর্থিক সমস্যা আছে। তিনি যখন ছোটো ছিলেন তখন তাদের গ্রামে ইলেকট্রিক ছিলনা। তাই তিনি লণ্ঠনের আলোতে পড়াশোনা করতেন। তাঁর সাফল্যের যাত্রাপথে তাঁর মা সুফিয়া বেগম ও বাবা ইলিয়া মোল্লার যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ছেলে যাতে ঠিকভাবে পড়াশোনা করে তার জন্য তাঁরা গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকতেন। গ্রীষ্মকালে যাতে তাঁর পড়াশোনার ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য তাঁর মা-বাবা খেজুর পাতার হাতপাখা নিয়ে তাঁর পাশে বসে থাকতেন। সদ্য তিনি যে পুরস্কারটি সম্মানিত হতে চলেছেন তার পিছনে তাঁর স্ত্রী সাদিয়া আফরিনের সহযোগিতা ও উৎসাহ একান্ত ছিল। তাঁর স্ত্রী দর্শনের একজন অধ্যাপিকা। 

একজন ব্যক্তির বড় হওয়ার পিছনে যেমন পরিবারের লোকেদের ভূমিকা থাকে তেমনই আমাদের সমাজে বাস করা নানান পেশার মানুষদের ভূমিকাও থাকে। তাঁর স্নাতক শিক্ষক অধ্যাপক অর্ঘ্য হাইত, পিএইচডি সুপারভাইজার অধ্যাপক স্বপন দত্ত, পোস্ট ডক্টরাল সুপারভাইজার অধ্যাপক ইনং ইয়াং ও জাতীয় ধান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক তাঁকে  নানাভাবে সাহায্য করেছেন এবং তাঁকে উৎসাহ দিয়েছেন। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে
  

No comments