Header Ads

বিশ্বের প্রথম ভারতীয় হিসেবে জি জি স্টোকস অ্যাওয়ার্ড জিতলেন বাঙালি বিজ্ঞানী নির্মাল্য ঘোষ


বিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন বাঙালি বিজ্ঞানী নির্মাল্য ঘোষ। আলোর মেরুকরণের ক্ষেত্রে মৌলিক ব্যবহারিক বিষয় সংক্রান্ত গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন তিনি৷ কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে তিনি গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।  তিনি পেশায় একজন অধ্যাপক। তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মালপাড়ার বাসিন্দা। 


আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর অপটিকস অ্যান্ড ফটোনিকসে ২০০৪ সাল থেকে আলোক মেরুকরণের মৌলিক ব্যবহারিক বিষয় নিয়ে গবেষণার জন্য প্রত্যেক বছর সারা বিশ্ব একজনকে 'জি জি স্টোকস অ্যাওয়ার্ড' প্রদান করে থাকে। ২০২১ সালে এই জি জি স্টোকস অ্যাওয়ার্ড জিতে নিলেন বাঙালি বিজ্ঞানী নির্মাল্য ঘোষ। বিশ্বের  প্রথম ভারতীয় হিসেবে তিনি জিতে নিলেন এই পুরস্কার। এর আগে ভারতের আর কোনো ব্যক্তিই পাননি এই পুরস্কার। 

নির্মাল্যবাবুর গবেষণায় আবিষ্কৃত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের মেরুকৃত আলো পদার্থের ওপর ফেলে বিচ্ছুরিত বর্ণালী পর্যবেক্ষণের দ্বারা পদার্থের কম্পোজিশন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। বর্তমানের টেকনোলজি ব্যবহার করে অনেক সময় কোষ বা কোষের ভেতরকার বিষয়গুলো নিখুঁত করে দেখা যায় না। কিন্তু আলোর মেরুকরণের এই বিশেষ তত্ত্ব স্বাস্থ্যবিজ্ঞানে বিভিন্ন রোগকে প্রাথমিকভাবে নির্ণয় করতে দারুণ ভাবে কাজে লাগবে। এই প্রযুক্তি অতি সংবেদনশীল সেন্সর হিসেবে কাজ করে বলে ক্যান্সার রোগীদের প্রথম অবস্থায় শনাক্ত করতে এই পদ্ধতি বিশেষ সুবিধা দেবে। তাছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জৈব রাসায়নিক এবং রসায়নিক পদার্থকে শণাক্ত করতে এই তত্ত্বকে কাজে লাগানো যাবে। সেই সঙ্গে আলোক নির্ভর ন্যানো টেকনোলজিতেও এই তত্ত্ব প্রয়োগ করে অনেক উন্নতমানের ব্যবহারিক ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র তৈরি করা যাবে। 

বিজ্ঞানী নির্মাল্য ঘোষ ক্ষীরপাই শহরে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। তারপর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় বিএসসি ও এমএসসি উত্তীর্ণ হন৷ এরপর আইআইটি কানপুর থেকে লেজার টেকনোলজিতে তিনি এমটেক করেন ও ইন্দোর থেকে পিএইচডি করেন। তারপর তিনি কানাডার টরেন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট ডক্টরেট করেন। তিনি প্রায় এক দশক ধরে ইন্দোরের পারমাণবিক শক্তিমন্ত্রকে গবেষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি৷ ২০০৯ সাল থেকে তিনি যুক্ত আছেন কলকাতা আইজারে। সেখানে তিনি 'বায়োন্যাপ' নামে আলোকের জৈবিক ও ন্যানো প্রযুক্তির গবেষণাগার স্থাপন করেন। এই গবেষণাটি করতে তার দশ বছর সময় লেগেছে। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments