নিরবে নব্বইটি বসন্ত পার করে আজকে প্রয়াত হলেন অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়
বিনোদন জগতে নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়। বাংলা চলচ্চিত্র ও থিয়েটার জগতের এক অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন তিনি। রবিবার সকাল ৯ টা বেজে ৩৬ মিনিটে তিনি ইহলোক ছেড়ে পাড়ি দিলেন অমৃতলোকে। পারিবারিক সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হলো তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণের শোক কাটতে না কাটতেই টলিপাড়ায় এলো আরেক দুসংবাদ। বাংলা চলচ্চিত্রে দীর্ঘকাল ধরে অভিনয় করে দর্শকদের নজর কেড়েছিলেন তিনি। ১৯৫৯ সালে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন তিনি। সত্যজিৎ রায়, মৃনাল সেনের মতো প্রখ্যাত পরিচালকদের সাথে কাজ করেন তিনি। তাঁর অভিনীত প্রথম ছবি মৃনাল সেনের 'নীল আকাশের নীচে'। তারপর সত্যজিৎ রায়ের 'জয়বাবা ফেলুনাথ' ছবিতে 'মছলিবাবা'র চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এছাড়াও 'অশনি সংকেত', 'দাদার কীর্তি', 'সাহেব', 'গণশত্রু', 'পাতালঘর', 'মৃগয়া', 'মর্জিনা আবদুল্লা', 'সতী', 'দামু', 'দেশ', 'কাঁচের পৃথিবী', 'অবৈধ', 'রাজু আঙ্কেল', 'হলুদ পাখির ডানা', 'বাকিটা ব্যক্তিগত', 'ভোরের পাখি', 'জনতার আদালত', 'সিরাজ', 'এগারো', 'আলিনগরের গোলকধাঁধা', 'গয়নার বাক্স', 'বাঁশিওয়ালা', 'স্পর্শ', 'ছায়াময়' ও আরো অনেক ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। রূপোলী পর্দার পাশাপাশি ছোটো পর্দাতেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। তিনি 'ব্যোমকেশ বক্সী' ওয়েব সিরিজের 'মাকড়সার রস' গল্পে অভিনয় করেন।
১৯৩০ সালের ১ লা মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর পিতা অমরেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন থিয়েটার কর্মী। জন্মসূত্রে তাঁর নাম ছিল সৌরেন্দ্রনাথ কিন্তু ডাক নামেই তিনি বিখ্যাত হয়ে যান। ভারতী বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৬ সালে তিনি ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷ এরপর মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি ছিল তাঁর গভীর আগ্রহ। পাড়ার নাট্যদলে তিনি অল্প বয়স থেকেই মহিলার অভিনয় করতেন। ১৯৫৭ সালে বিশ্বরূপাতে প্রম্পটার হিসেবে যোগ দেন। ক্ষুধা নাটকে ঘটনাচক্রে কালী বন্দোপাধ্যায়ের পরিবর্তে শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷
তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলা ছবির জগতে। অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায় যিনি এক বছর আগেও সুস্থ শরীরে অভিনয় করেছিলেন। আর ভাবতে অবাক লাগে আজকে তিনি আর নেই। অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসানে সমাপ্তি ঘটলো একটি অধ্যায়ের।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment