দার্জিলিং এর চিড়িয়াখানায় জন্ম নিল বিলুপ্তপ্রায় রেড পান্ডার তিনটি বাচ্চা
রেড পান্ডার কথা আমরা সকলেই কমবেশি শুনেছি। কুং ফু পান্ডা কার্টুন প্রায় সব শিশুদের প্রিয় একটি কার্টুন। স্থানীয়ভাবে এরা বিড়াল ভাল্লুক নামেও পরিচিত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশ, সিকিম, আসাম ও অরুনাচল প্রদেশে এদের দেখা যায়। এদের সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় দেখা মেলে চীনে। এছাড়াও মায়ানমার, ভূটান ও নেপালে কম সংখ্যায় দেখা যায়। ২০১৫ সালে এরা আই.ইউ.সি.এন. এর লাল তালিকার অন্তর্ভুক্ত হয় রেড পান্ডা। বর্তমানে সারা বিশ্বে এদের সংখ্যা ১০,০০০ এরও কম। তাই এই প্রাণীর সংরক্ষণ খুব প্রয়োজন। বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় এ নিয়ে অবশ্য কাজ চলছে। চীনে ৩৫, মায়ানমারে ২৬, ভারতে ২০, ভূটানে ৫ টি ও নেপালে কয়েকটি রেড পান্ডার সংরক্ষিত অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে।
মানুষের বিভিন্ন কর্মকান্ড, চোরাশিকারিদের আক্রমণ, কম প্রজনন ক্ষমতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে এদের প্রজাতি আজ বিপন্ন। একটি রেড পান্ডার জন্ম হতে ১৮ মাস ও লালন-পালনের মাধ্যমে বড় করতে আরো তিন বছর সময় লাগে, যার ফলে এদের প্রজনন বেশ কঠিন। এদের প্রজননের জন্য সারা বিশ্বের ১৭৩ টি প্রতিষ্ঠানে ৫১১ টি রেড পান্ডা পাঠানো হয়েছে। এর সুফলও মিলতে শুরু করেছে বিভিন্ন জায়গায়। শুধুমাত্র উত্তর আমেরিকাতে ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ১০২ টি রেড পান্ডার জন্ম সম্ভব হয়েছে।
দার্জিলিং এর পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে ২০০৩ এ চারটি রেড পান্ডার জন্ম দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। ২০০৩ এর পর আবারও ৩টি রেড পান্ডার জন্ম হয় এই লকডাউনের মধ্যে। যার ফলে এই চিড়িয়াখানায় রেড পান্ডার সংখ্যা ২৪ এ পরিণত হয়। আগামী বছরের মধ্যে বিভিন্ন ন্যাশানাল পার্কে ৮ টি রেড পান্ডা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই জুলজিক্যাল পার্ক। রেড পান্ডার প্রজননে আগামী দিনেও দার্জিলিং এর এই জুলজিক্যাল পার্কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। মানুষের আবির্ভাবের বহু আগের থেকে এই প্রাণী বিচরণ করে। মানুষের অসাধু কার্যকলাপ এদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে তাই সাধারণ মানুষেরও উচিত এদের নিরাপত্তা দেওয়া। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে এভাবেই এগিয়ে আসতে হবে মানুষকে।
প্রতিবেদন- অমিত দে
Post a Comment