এক বাঙালির দক্ষিণ আমেরিকা অভিযান, চিনে নিন বাঙালির কলম্বাসকে
চাঁদের পাহাড়, আমাজন অভিযানের গল্প সকলেই কম-বেশি নিশ্চয় শুনেছেন৷ কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকা অভিযানের গল্প কী শুনেছেন? হ্যাঁ এই প্রতিবেদনে আপনাদের এমন একজন বাঙালি অ্যাডভেঞ্চারারের গল্প শোনাবো, যার কথা শুনলে আপনারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাবেন। তিনি ছিলেন দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম বাঙালি অভিযাত্রী।
বাংলার কিংবদন্তি শিশুসাহিত্যিক ময়ূখ চৌধুরীর 'বঙ্গঁদেশের রঙ্গঁ', বনফুলের লেখা 'বিশ্বাস মশাই', সত্যজিৎ রায়ের 'ছিন্নমস্তার অভিশাপ', বিমল মুখার্জির 'দু-চাকার দুনিয়া' প্রভৃতি উপন্যাসে আমরা উল্লেখ পাই এই বাঙালি অভিযাত্রীর। তিনি হলেন কর্নেল সুরেশ বিশ্বাস। যে নামটি এখন বিস্মৃতপ্রায়৷ দক্ষিণ আমেরিকার অদ্বিতীয় সেনানায়ক ছিলেন তিনি। তাঁর অসীম সাহস তাঁকে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে পৌঁছে দিয়েছিল৷
আজ থেকে ১৫০ বছর আগে ব্রাজিলে গিয়ে যুদ্ধে লড়েছিলেন সুরেশচন্দ্র বিশ্বাস। বাঙালিকে যারা ভীতু মনে করেন, দুর্বল মনে করেন তাদের কাছে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার মতো এক উল্লেখযোগ্য নাম লেফটেন্যান্ট সুরেশচন্দ্র বিশ্বাস। সাহিত্যিক ময়ূখ চৌধুরী তাঁর লেখাতে সুরেশচন্দ্র বিশ্বাসকে একজন সফল বাঙালি নায়ক হিসেবে দেখিয়েছেন।
সুরেশচন্দ্র বিশ্বাস নদীয়ার নাথপুরে বৈষ্ণব মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্য বয়স থেকেই তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা ও বিদ্রোহী। তিনি শৈশবে প্রচণ্ড ডানপিটেও ছিলেন৷ একবার একটি বেড়াল কাঠবিড়ালি শিকার করছিল। সেই কাঠবিড়ালিকে বেড়ালের মুখ থেকে বাঁচাবার জন্য বেড়ালের সাথে রক্তারক্তি অবস্থা হয়ে যায় তাঁর। বেড়ালটি তাঁর হাতে কামড়ে দেয়। তিনি খ্রীস্টান ছেলেমেয়েদের সাথে খেলা করতেন বলে বাড়ির সদস্যদের সাথে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। ১৪ বছর বয়সে বাবার সাথে কলহ করে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান৷ গৃহত্যাগের পর খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করেন তিনি৷ এর পরেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করতে শুরু করলেন। চাকরির অন্বেষণে প্রথমে তাঁকে রেঙ্গুন যেতে হয়।
তাঁর ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে একটা চাকরি পর্যন্ত জুটছিল না। রেঙ্গুনে তো অঘোরে প্রাণটাও গিয়েছিল বলে একবার৷ ইরাবতী নদীতে কোনো এক সন্ধ্যাবেলায় তিনি নৌকাভ্রমণ করে বাড়ি ফিরছিলেন। কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসলো দুটো ধারালো দা তাঁর পাশে। সুরেশবাবুর গায়ের ওপর মল্লযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই মগ ডাকাত৷ মল্লযুদ্ধে পারদর্শী সুরেশচন্দ্রের সাথে ডাকাতদের লড়াই করতে গিয়ে ভালোই বেগ পেতে হচ্ছিল। তবে ডাকাতদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে তিনি যখন মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছেন, সহসা একদল বরযাত্রীর ঐ পথে আগমন হয়৷ তাদের দেখে ডাকাতের দল পলায়ন করে। প্রাণে বেঁচে যান সুরেশচন্দ্র বিশ্বাস।
রেঙ্গুন পর্ব চুকিয়ে পরবর্তী গন্তব্য ঠিক হয় মাদ্রাজ৷ যেদিন রাত্রে তিনি মাদ্রাজ রওনা হন তার পূর্বে রেঙ্গুনকে বিদায় জানাতে একটু হাওয়া খেতে বেরোলেন৷ তিনি আনমনে হাওয়া খেতে বসেছেন শান্তিতে একটা নিরিবিলি জায়গায়, এমতাবস্থায় দূর থেকে ভেসে এলো প্রকাণ্ড চিৎকার৷ পাশের এক দোতলা বাড়িতে আগুন লেগেছে৷ দোতলার জানালা থেকে এক নারীর আর্ত চিৎকার ভেসে আসছে। তিনি ক্ষণিকের জন্য ফিরে যাওয়ার কথা ভুলে গিয়ে দৌঁড়ে গিয়ে ঐ বিদেশিনী নারীকে উদ্ধার করেন। ঐ বিদেশিনী ভালোবেসে ফেলে তাঁকে। সুরেশচন্দ্র সেই বিদেশিনীর প্রতি টান অনুভব করতে থাকেন। যদিও তিনি নিজের অনিশ্চিত জীবনের সাথে ঐ বিদেশিনীকে না জড়িয়ে মনের দুঃখে রেঙ্গুন ত্যাগ করে মাদ্রাজগামী জাহাজে উঠে পড়েন।
মাদ্রাজে বড়ো আশা নিয়ে আবারো চাকরির সন্ধান করতে থাকেন এক একা। পড়লেন ভাষা সমস্যায়। তামিল না জানার জন্য কেউই চাকরিতে নিলেন না তাঁকে। একদিকে রোজগারহীন অবস্থা তো অন্যদিকে পেটে খিদের জ্বালা, মনে তেজ নেই, জীবন চলবে কী করে? ক্ষুধাহীন দিনরাত্রি, একলা নিঃসঙ্গ জীবন। কিন্তু চোখে অ্যাডভেঞ্চারের অদম্য নেশা। সবুজ বসুন্ধরাকে ফেলে রেখে একা একা চলে যাওয়াও তো মানাচ্ছে না৷ তাহলে এখন কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়? তিনি যে অ্যাডভেঞ্চারে যাবেন তার জন্য টাকাকড়ি, খাবার তো কিছু নেই। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেন এ জীবন তিনি আর রাখবেন না। মাদ্রাজের সমুদ্র সৈকতে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন আত্মহত্যা করার জন্য। হঠাৎই মেঘ না চাইতেই জল এসে গেল৷ একজন সাহেব এসে তার দুই নাতিকে বিলেতে দেখাশোনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। এমন প্রস্তাব ছেড়ে কেউ কী আর মরতে পারে? তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বর্জন করে জাহাজে পাড়ি দিলেন বিলেতে।
সমুদ্রের দীগন্ত বিস্মৃত জলরাশি, সমুদ্রের সাত রঙের হাতছানি উপভোগ করে জাহাজে করে পৌঁছে যান বিলেতে। ঐ সাহেবটির বাড়িতে তার দুই নাতির দেখাশোনার দায়িত্ব নিলেন৷ অত্যন্ত সততার সাথে তিনি তাদের দেখভাল করতে লাগলেন। কয়েকদিন এই চাকরি চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি৷ তারপর তিনি প্রত্যাবর্তন করেন কলকাতায়, নিজের কলেজের অধ্যক্ষ আটসন সাহেবের কাছে।
কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্টই বুঝতে পারলেন শিক্ষিত না হলে তার কোনো মূল্য নেই৷ শিক্ষার আলোয় দীক্ষিত না হলে যে-কোনো মানুষের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তিনি হাড়ে হাড়ে শিক্ষার গুরুত্ব টের পেতে লাগলেন। ছোটো-খাটো চাকরির কাজ জুটিয়ে বেশি বেশি করে বইপড়াতে জোর দিতে লাগলেন তিনি৷ তাতেও কোনো লাভ হলোনা৷ তাঁর মন সেই অ্যাডভেঞ্চারের জন্য পড়ে আছে। সমুদ্র ও বন্দরের পুরানো স্মৃতি স্মরণে আসতে থাকে তাঁর। বি.এস.এন কোম্পানির এক জাহাজের ক্যাপ্টেন স্টুয়ার্টকে তিনি পটিয়ে নিলেন। বিনিময়ে পেলেন স্টুয়ার্টের সহকারীর কাজ। সাত-পাঁচ চিন্তা না করে আবারো বিলেতে ছুটে গেলেন তিনি৷
তিনি এবার বিলেতে অবিচ্ছিন্ন থাকার জন্য সব ধরণের অদ্ভুত কাজ করেছিলেন। তিনি সেখানে কিছুদিন পেপারওয়ালার কাজ ও ফেরিওয়ালার কাজ করলেন। এই সময় নিজস্ব চেষ্টার বশে খানিক লেখাপড়া আরম্ভ করে প্রথাগত শিক্ষার অভাব কিছুটা মিটিয়ে নিতে শুরু করেন৷ তিনি এই সময়টাতে লন্ডনের এক কেন্টে বসবাস করতেন। এই কেন্টেই অগত্যা এক সার্কাস দলের সাথে তাঁর যোগাযোগ স্থাপন হয়। তিনি দুঃসাহসের সার্কাস দলে নাম লিখিয়ে দিলেন৷ সার্কাসের ম্যানেজার তাঁর পরীক্ষা নেন৷ একজন বলশালী পালোয়ানের সাথে তাঁর কুস্তি বাঁধানো হলো। তিনি অনায়াসেই পরাজিত করলেন বলশালী পালোয়ানটিকে৷ এরপরই সার্কাস দলে পাকা হয়ে গেল তাঁর চাকরি। বেতন বাবদ সপ্তাহে ১৫ সিলিং৷ সাসেক্সে সার্কাস দল তাঁবু ফেললে তিনি সার্কাসে খেলা দেখাতেন৷ ক্রমেই তিনি সার্কাসে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকেন। সার্কাসের সূত্র ধরেই সিংহকে বশ করার খেলায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন৷ ১৮৮০ সালে সার্কাস দলের সাথে ইংল্যান্ডে ভ্রমণকালে প্রসিদ্ধ হিংস্র পশু বশকারী প্রফেসর জামবাখের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ ঘটে৷ জামবাখের প্রস্তাবে তিনি সার্কাস ছেড়ে তার নিজস্ব পশুশালাতে সহকারী হিসেবে যোগদান করেন৷ বছর দুয়েক পর পুনরায় ফিরে এলেন সার্কাসে৷ ১৮৮২ সালে বিলেতে এক প্রদর্শনীতে তিনি বাঘ-সিংহের খেলা দেখিয়ে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন৷ তিনি সার্কাস দলের সাথে ইউরোপ যাত্রাকালে জার্মানির হামবুর্গে বিশিষ্ট পশু প্রশিক্ষক গাজেনবাখের সাথে পরিচয় হয় তাঁর। আবার সার্কাস ছেড়ে মোটা অঙ্কে পশুশালার দায়িত্ব পেলেন৷ তারপর এর থেকেও অধিক আয়ে জো কার্ল নামক এক জনৈক ব্যক্তির পশুশালার দায়িত্ব পেলেন তিনি৷ কিয়ৎ কাল পর সেই তিনি পুনরায় সার্কাসে যোগ দিলেন৷
১৮৮৫ সালে জার্মানিতে থাকার সময় এক জার্মান মেয়ে তাঁকে ভালোবাসার প্রস্তাব দেন। তিনি এই প্রস্তাব গ্রহণও করেন। মেয়েটির বাড়িতে তাদের প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হওয়ার পর বাড়ির লোক সুরেশচন্দ্রের প্রাণ নিয়ে টানাটানি করতে থাকেন। তিনি নিজের প্রাণ বাঁচাতে সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করে জার্মানি পরিত্যাগ করেন৷ মেয়েটির বাড়ির লোক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠিয়ে হন্য হয়ে তাঁর খোঁজ চালাতে থাকেন৷ ইউরোপে যেন তাঁর বাঁচবার জোঁ নেই। কী আর করবেন পশুপাখি দেখাশোনার কাজে আমেরিকা পাড়ি দেন৷ সেখানেও এক সার্কাস দলের সাথে মেক্সিকো হয়ে ব্রাজিল পাড়ি দেন৷
ব্রাজিলের রিও ডি জেনরো শহরে তিনি প্রথমদিকে গণিত ও রসায়ন নিয়ে বক্তৃতা দিতেন৷ তারপর এক রাজকীয় পশুশালাতে রক্ষকের কাজ করতেন। এখানেও প্রেমে পড়েন একজন সুন্দরী রমণীর সাথে। জীবন যেন সিনেমার মতো হয়ে উঠেছে তাঁর। ঐ সুন্দরী রমণী মেয়েটি তাঁকে বলেন যে সৈন্যের বেশে নাকি তাঁকে বেশ মানাবে। ২৫ বছর বয়সী সুরেশ মেয়েটির কথা শুনে আঁতকে উঠলেন। প্রেমিকার কথামতো তিনি ব্রাজিলের সৈন্যবাহিনীতে যুক্ত হন৷ তাঁর অসীম সাহসের জন্য তিনি ছোটো এক সৈন্যদলে অধিনায়কের দায়িত্ব পান৷ বিরাট এই দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সান্তাক্রুজে গমন করলেন৷
ব্রাজিলে সেনাবাহিনীর চাকরিতে তিন বছর থাকা বাধ্যতামূলক ছিল৷ কাজেই তাঁর মেয়াদ তিন বছর ফুরিয়ে গেলেও তিনি সৈন্যবাহিনী থেকে কোনোদিনই ইস্তফা দিলেন না৷ সেনাবাহিনীতেই তিনি থেকে গেলেন। এই সময়কালে সেই সুন্দরী রমণী মেয়েটিকে বিয়ে করে নেন তিনি৷ অল্পদিনের মধ্যেই পদোন্নতি ঘটলো সৈন্যবাহিনীতে। কিছুকাল পর লেফটেন্যান্টের দায়িত্ব দেওয়া হলো তাঁকে।
১৮৯৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রাজিলে বেঁধে গেল এক ভয়ানক রাষ্ট্র বিপ্লব৷ ভয়াবহ নৌবিদ্রোহে উত্তাল গোটা দেশ। রাজধানী রিওকে ঘিরে একযোগে গোলা ছুঁড়ে চলেছে বিশাল বিশাল কুড়িটি যুদ্ধজাহাজ৷ সিংহের মতো গর্জন করে উপকূলস্থ দুর্গ কামানগুলো আস্তে আস্তে জ্বলে উঠছে। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বদলা নিতে পাল্টা সাঁড়াশি আক্রমণ চালায় ব্রাজিলীয় সৈন্যদল। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জবাব দিতেও পরোয়া করছে না৷ এককথায় টালমাটাল অবস্থা। বিদ্রোহী থেকে ব্রাজিলীয় সৈন্যদল সকলে নাজেহাল হয়ে পড়ে।
বিদ্রোহীরা যুদ্ধ থামিয়ে পরিকল্পনা বদল করে৷ তারা নাথেরয় শহরের দিকে অগ্রসর হওয়ার ছক কষে নেয়৷ ছকমতো নাথেরয় শহরে ঢুকে কিছু অংশ দখল করে বসলো তারা। নাথেরয় রক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান ছিলেন সুরেশচন্দ্র বিশ্বাস। তবে তাঁর হাতে মাত্র পঞ্চাশ জন সেনা ছিল৷ কিন্তু তাতে কার কী? সুরেশবাবু তো সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন যে-কোনো মূল্যে দখলদারদের তাড়াতেই হবে। তিনি মাত্র পঞ্চাশ জন সৈন্যদের সহায়তায় ক্ষমতাবলে তাদের ওপর আক্রমণ শানিয়ে শত্রুমুক্ত করলেন নাথেরয় শহরকে। তিনি দখলদারিদের হঠিয়ে ব্রাজিলের বুকে বাঙালির জয়ের পতাকা উড়িয়ে দিলেন। নদীয়ার ছেলেই একদিন সূদুর ব্রাজিলে বীর প্রতিনিধি হয়ে উঠবেন একথা কারও জানা ছিল না। তাঁর জীবনটা রহস্যময় অ্যাডভেঞ্চারে পূর্ণ ছিল। তাঁকে নিঃসন্দেহে বাঙালির কলম্বাসও বলা চলে। কারণ কলম্বাসের থেকে তিনি কোনো অংশে কম ছিলেন না৷ এমন একজন বাঙালির গল্প সত্যিই অবিশ্বাস্য।
তথ্যসূত্র- দ্য টেলিগ্রাফ, রোর বাংলা, পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক পাঠাগার নেটওয়ার্ক
Post a Comment