Header Ads

আমেরিকার অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে এবার পরামর্শদাতা একজন বাঙালি


২০১০ সালে 'সিমোন অ্যান্ড শাস্টার' এবং 'দ্য এম্পারার অফ ম্যালাডিজ: এ বায়োগ্রাফি অফ ক্যান্সার' নামে দুটো বই প্রকাশ করেন তিনি। দ্য এম্পারার অফ ম্যালাডিজ: এ বায়োগ্রাফি অফ ক্যান্সার বইতে প্রাচীন মিশর থেকে আধুনিকতম কেমোথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপি পর্যন্ত মানুষের ক্যান্সার রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার বিবর্তনের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। দি ওপরাহ নামের একটি ম্যাগাজিনে সেরা ১০ টি বইয়ের মধ্যে তালিকাভুক্ত হয়েছিল এই বইটি। ২০১১ সালে বইটি ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কল অ্যাওয়ার্ডে ফাইনালিস্ট হিসেবে মনোনীত হয়। একই বছরের ১৮ ই এপ্রিল এই বইটির জন্য আমেরিকার সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার পুলিৎজার অর্জন করেন তিনি। 



প্রখ্যাত ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিশ্বতালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। ২০১১ সালে কিংবদন্তি টাইমস ম্যাগাজিনে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ একশো জন মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পিপলের তালিকায় রাখা হয় তাঁর নাম। তিনি হলেন একজন বাঙালি পুরুষ। নাম তাঁর সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। যিনি বর্তমানে 'অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর অফ মেডিসিন' বিভাগে কর্মরত নিউইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

তাঁর জীবনের কিছু স্মরণীয় ঘটনা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। একবার তিনি একজন ক্যান্সার আক্রান্ত প্রবীণ মহিলার চিকিৎসা করেন৷ তিনি মূলত পেটের ক্যান্সারে ভুগছিলেন৷ তিনি একাধিকবার পুনরায় রোগ থেকে সরে এসেছিলেন৷ ঐ প্রবীণ মহিলা তাঁকে একটি প্রশ্ন করে বসেন৷ 

প্রবীণ মহিলাটি বলেছিলেন, "আমি যেতে ইচ্ছুক, তবে আমি এগিয়ে যাওয়ার আগে আমার জানার দরকার যে আমি কী এমন লড়াই করছি?"

এই প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া মোটেও সহজ নয়। কিন্তু ড. মুখার্জী সহজ সরল ভাষায় প্রশ্নটির উত্তর দেন। তিনি বলেন "ক্যান্সারের সংজ্ঞা দেওয়ার বিষয়টি হলো হাজার বছর আগে এই রোগের প্রথম ডকুমেন্টেড উপস্থিত হওয়ার পর থেকে চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানীরা এই লড়াইয়ের জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন৷   

ক্যান্সার কেবল একটি বিভাজনকারী কোষ নয়৷ এটি একটি জটিল রোগও। এটি আক্রমণ করে, এটি মেটাস্টেজেস করে এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে যায়। অতএব ক্যান্সারের অনেকগুলি স্তর আছে যা এখনও তাদের শৈশবে রয়েছে। আমরা আশা করছিলাম যে ক্যান্সারটি কোনও প্রকার বাহ্যিক ঘটনা হিসাবে রূপান্তরিত হবে। একটি ভাইরাস বা এমন কিছু যা তখন আমাদের পরিবেশ এবং আমাদের দেহ থেকে মুছে ফেলা হতে পারে ও আমরা এ থেকে মুক্তি পেতে পারি। ক্যান্সারের জিনগুলি আমাদের প্রতিটি ক্রোমোজোমের ভিতরে বসে দুর্নীতিগ্রস্ত বা সক্রিয় হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।" 

ক্যান্সার সংক্রান্ত যে-কোনো প্রশ্নের তিনি এভাবেই সহজে ব্যাখ্যা দেন। ক্যান্সার নিয়ে তিনি বিস্তর গবেষণা করে চলেছেন। তিনি স্ট্যানফোর্ড, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাভার্ড মেডিকেল স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। নেচার, দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং সেলের মতো পত্রিকা প্রকাশ করেছে তাঁর নিবন্ধ৷ তিনি বর্তমানে আমেরিকার বাসিন্দা। তিনি তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নিয়ে সেখানে বসবাস করেন৷ 

এই গুণি বাঙালি গবেষক ও লেখক এবার হাল ধরতে চলেছেন আমেরিকার অর্থনীতির। করোনা সংক্রমণে সারা বিশ্বে এক নম্বরে উঠে এসেছে আমেরিকার নাম। ফলে আমেরিকার অর্থনীতির হাল খুব খারাপ৷ তাই আমেরিকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হাল ধরলেন ড. সিদ্ধার্থ মুখার্জী। নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোর রিপোর্ট অনুযায়ী আমেরিকার অর্থনীতির হাল ফেরাতে ১৫ জনের 'ব্লু রিবন কমিশন' গঠন করা হয়েছে। তাতে নাম রয়েছে ড. সিদ্ধার্থ মুখার্জীর। যা এককথায় বাঙালি জাতির বিরাট বড়ো সাফল্য। এই বাঙালি ব্যক্তিটির জন্য সকলের গর্ব হওয়া উচিৎ।    



তথ্যসূত্র- এনপিআর ডট ওআরজি, নিউইয়র্ক টাইমস।

No comments