Header Ads

বাংলা শিল্পী পক্ষের আন্দোলন ক্রমশ বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছে


এফএমে বাংলা গান না চালানোর বিরুদ্ধে শিল্পীদের যে প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু হয়েছে তা ক্রমে বৃহৎ আন্দোলনের দিকে এগোচ্ছে। ফলাফল কী হবে আমরা কেউই জানি না। তবে বাঙালিরা আজ পর্যন্ত যা কিছু বিষয় নিয়ে আন্দোলন করেছেন সবই সফলতার মুখ দেখেছে। বাংলা গানকে অবজ্ঞা করার বিষয়টা একদিনে তৈরি হয়নি৷ বহু বছরের চেষ্টা। হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের নামান্তর হলো বাংলা গানকে খাটো করা৷ বাংলা গানের বাজারকেও ধসিয়ে দেওয়ার একটা গোপন ষড়যন্ত্র চলছে। বাঙালি শ্রোতারাও সেই ষড়যন্ত্রের শিকার। বাংলা গান বন্ধ করে শ্রোতাদের জোর করে গেলানো হচ্ছে হিন্দি গান৷  


এক এক করে সকল শিল্পী প্রতিবাদ করে ঝড় তুলছেন সোশ্যাল মিডিয়াতে। টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম সব জায়গাতে হুঙ্কার ছাড়ছেন শিল্পীরা। সঙ্গীত শিল্পী অনুপম রায় টুইট করে লিখলেন "বাঙালিকে বাংলা গান স্ট্রিম করিয়া শুনিতে শিখিতে হইবে৷ বুঝিতে হইবে ফেসবুক, গান শুনিবার স্থান নয়। তামিল অথবা পাঞ্জাবী মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পাল্লা দিতে সে কোনদিনই পারিবে না যতদিন না সে সঠিক পদ্ধতিতে গান শুনিবার অভ্যাস করে।" একই সঙ্গে রূপম ইসলামও নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে টুইট করে লিখলেন "তোমরা কাকে কী বলছ? জেনে বলছ তো? শোন হে। এই যে পথে তোমরা হাঁটছ, এর নেতা আমিই। আমি যা বলবার বলেইছি৷ এবার অন্যদের দিয়ে বলাও। আর একটা লোককে দেখিয়ে দাও যে এদেরই আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্টেজ থেকে কে এদের বলেছে। একটা লোক দেখাও যে তিনটে পুরস্কার পাওয়ার পরও গান না বাজানোর প্রতিবাদে পুরস্কার নিতে যায়নি৷" 

শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যে আন্দোলন শুরু করতে চলেছেন এর নেপথ্যে অবদান রয়েছে বাংলা শিল্পী পক্ষের। শিল্পীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাতে নিজের অধিকার বুঝে নেয়। সেই অধিকারের লড়াইতে শিল্পীদের মাঠে নামাতে চায় তারা৷ বাংলা পক্ষ বার্তার সূত্রে একটি বিশেষ প্রতিবেদনের মাধ্যমে শিল্পীদের পাশাপাশি শ্রোতাদেরও রেডিওতে বাংলা গান না চালানোর বিরুদ্ধে একজোট হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ কথাও জানানো হয়েছে যে শ্রোতারা যদি বাংলা গান শুনতে চেয়ে বারেবারে এফ এম চ্যানেলকে জানান৷ তবে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। 

রূপঙ্কর বাগচি, সৈকত বন্দোপাধ্যায়, মনোময় ভট্টাচার্য, রূপক দে, ইন্দ্রজিৎ দে, পর্ণাভ বন্দোপাধ্যায়, ইমন সেন, রাঘব চট্টোপাধ্যায় সহ একঝাঁক শিল্পী মুখ খুলেছেন রেডিওতে বাংলা গানকে ব্রাত্য রাখার বিপক্ষে৷ বেশিরভাগ শিল্পীদের একটাই কথা প্রাইম টাইমে বাংলা গান চালানো হোক৷ এতগুলো শিল্পীর ভিডিও বার্তা অক্সিজেন জোগাচ্ছে আন্দোলনটিকে। কয়েকটি পোর্টাল থেকেও প্রতিবেদন বানিয়ে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে আন্দোলনকে।

কথায় আছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা, বিন্দু বিন্দু জল, তাই দিয়েই গড়ে তুলি মহাসাগর অতল। প্রতিটি আন্দোলন ক্ষুদ্র পরিসর থেকেই তৈরি হয়৷ একটা মানুষও ছোটো থেকে ক্রমে বড় হয়। প্রাকৃতিক নিয়মে যে-কোনো বড় ঘটনা ছোটো ছোটো ঘটনা থেকেই তৈরি হয়। স্বাভাবিক ভাবে এই আন্দোলনও যে বৃহত্তর হবেনা, এর কোনো মানে নেই৷ যেভাবে সকল শিল্পীরা ধীরে ধীরে সোচ্চার হচ্ছেন তাতে আন্দোলন প্রাণ পাচ্ছে একটু একটু করে। খুব শীঘ্রই সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়িয়ে আন্দোলন রাস্তায় নামবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments