Header Ads

প্রকাশের পথে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গীত দর্শন সম্পর্কিত প্রথম বই 'নিহিত কোমলগান্ধার'



ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত 'মেঘে ঢাকা তারা', 'কোমলগান্ধার' ও 'সুবর্ণরেখা' এই তিনটি ছবিকে বলা হয় 'দেশভাগ পরবর্তী চলচ্চিত্র ত্রয়ী'। 'মেঘে ঢাকা তারা' ছবিতে আমরা দেখতে পাই উদ্বাস্তু-শিবিরের জীবন ও নীতার যাপনযন্ত্রণা। নীতা তার দাদাকে ক্রন্দনের সুরে বলছে 'দাদা আমি বাঁচতে চাই'। 'কোমল গান্ধার' ছবিতে সেই যন্ত্রণা রূপক আকারে উঠে আসে সূক্ষ্মভাবে। 'সুবর্ণরেখা' ছবিতে সেই যন্ত্রণার বিশেষ প্রত্যাবর্তন লক্ষ্য করা যায়। 



এই তিনটে ছবিতে তিনি অদ্ভুত ভাবে গানের ব্যবহার করেছিলেন। তবে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত 'কোমল গান্ধার' ছবির গান তাঁর অন্যান্য ছবিগুলোকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। 'কোমল গান্ধার' ছবির শিরোনাম শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুর এবং নামকরণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুনশ্চ কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতার উল্লিখিত পংক্তির অনুষঙ্গ থেকে করা হয়েছিল৷ 


'কোমল গান্ধার' ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেন ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সদস্য তথা বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র। এই চলচ্চিত্রে গীত রচনা করেছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, বিজন ভট্টাচার্য, সলিল চৌধুরীর মতো গুণী ব্যক্তিগণ৷ এমনকি কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের রচনাও উঠে এসেছে 'কোমল গান্ধার' এ৷ লোকসঙ্গীতে রণেন রায়চৌধুরী ও গণসঙ্গীতের গায়কীতে হেমাঙ্গ বিশ্বাস কাজ করেছিলেন। আবহপ্রদানে ওস্তাদ বাহাদুর খান এবং সহকারী পরিচালনায় শ্রী মন্টু ঘোষের অবদান অনস্বীকার্য। ছবিতে গান গেয়েছিলেন বিজন ভট্টাচার্য, দেবব্রত বিশ্বাস ও হেমাঙ্গ বিশ্বাস। ছবিতে উল্লেখযোগ্য স্মরণীয় বিষয় হলো বিবাহ সঙ্গীত ও শব্দের কন্ট্রাপুন্টাল ব্যবহার। রবীন্দ্র ও গণনাট্য সঙ্গীতের ব্যবহারে অনবদ্য হয়ে উঠেছিল 'কোমল গান্ধার' ছবির গান। 

'কোমল গান্ধার' ছবিতে ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গীত দর্শন ও তাঁর পরিচালিত অন্যান্য ছবির সঙ্গীত ও আবহের দর্শনকে বই আকারে এই প্রথমবার তুলে ধরতে চলেছেন লেখক প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত। যিনি একজন সাংবাদিক ও সঙ্গীত গবেষক। তাঁর রচিত এই বইটির নাম 'নিহিত কোমলগান্ধার'। চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত হতে চলেছে এই বইটি। আপাতত জোরকদমে চলছে বইটির অগ্রিম বুকিং। 

'নিহিত কোমলগান্ধার' বইটি সম্পর্কে লেখক প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত বলেন "ঋত্বিক ঘরানা'র মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, অনিল চন্দ্র সেনগুপ্ত, ওস্তাদ বাহাদুর খান, এ. টি. কানন এর মতো সুরকারেরা। সিনে সঙ্গীতের নতুন 'ডিক্সন' আবিস্কারের কৃতিত্ব তাঁদের-ই। কেউ নিয়ে এসেছিলেন ফোক-অর্কেস্ট্রা, কেউ বা শাস্ত্রীয় রাগদারির অন্য ভুবন। 

যেন আমরা ভুলে না যাই সলিল চৌধুরী, হরিপ্রসন্ন দাস, রণেন রায়চৌধুরী, আরতি মুখোপাধ্যায়, দেবব্রত বিশ্বাস, হেমাঙ্গ বিশ্বাস, গীতা ঘটকের কথা। তালিকা যথেষ্ট দীর্ঘায়ত। 

ঋত্বিকের সুরেলা পৃথিবী যাঁদের ছাড়া সত্যি অসম্পূর্ণ। 'নিহিত কোমলগান্ধার' উৎসর্গ করা হচ্ছে তাঁদেরই পুণ্যস্মৃতির উদ্দেশ্যে।"

'নিহিত কোমলগান্ধার' বইটি থেকে লেখক প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত উন্মোচন করতে চলেছেন ঋত্বিক ঘটকের কিছু অজানা দিক। ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গীত দর্শনকে উপলব্ধি করা যাবে এই বইটির মাধ্যমে। চলতি সপ্তাহে হাওয়াকল থেকে প্রকাশিত হচ্ছে এই বইটি। 

প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক 

No comments