লকডাউনে বাড়িতে বসে দেখে ফেলুন চমকপ্রদ ক্রাইম থ্রিলার 'রায়ভিলা হত্যাকান্ড'
গৃহবন্দী দুনিয়া,
পৃথিবীটা যেন কেমন রুদ্ধ হয়ে গেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, খাদ্যের অভাব,
সরকারের কাজ কর্মের সমালোচনা তার মধ্যেও কিছু বিতর্ক অসুস্থ রাজনীতি এই নিয়ে মানুষ
দিশেহারা। যেন এক অচেনা পৃথিবী। এই সময়ে মানুষের জন্য একটু আশার সঞ্চার ও দিশা
দিতে শিল্পী সমাজের ভূমিকা আজও চিরাচরিত দিনের মতোই প্রাসঙ্গিক। এই সময়ে দাঁড়িয়ে
বিভিন্ন রকমের চিন্তা ভাবনার সিনেমা চোখে পড়ছে।কেউ করোনা সতর্কতার সিনেমা বানাচ্ছেন, কেউ বা মানুষের সাথে খাঁচার পাখির তুলনা করে সিনেমা বানাচ্ছেন, কেউ বা মানুষের
অবসাদগ্রস্থতা নিয়ে, কেউ আবার মিউজিক্যাল ফিল্মও বানাচ্ছেন। এমন ভাবেই একটি
হত্যাকান্ড নিয়ে ফিল্ম বানালেন পরিচালক মেহেদি হাসান। মালদা নাট্যসেনা এবং
সিনেমাটিক অ্যাটেম্পটের প্রযোজনায় এই সিনেমাটি বানিয়ে ফেললেন পরিচালক মেহেদি হাসান। ফিল্মটির নাম হল 'রায়ভিলা হত্যাকান্ড'।
লকডাউনের সময়ে
দাঁড়িয়ে ঘরে বসে মালদা নাট্যসেনার এই কাজটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। প্রত্যেক
অভিনেতাকেই বাড়িতে শট নিতে হবে এবং কোয়ালিটিও রাখতে হবে যেটা এমনিতেই জটিলতা
বাড়িয়ে দেয়। যদিও ‘রায়ভিলা
হত্যাকান্ডের’ টিম বেশ দক্ষতার সাথেই করেছেন এই কাজ।এক্ষেত্রে অভিনেতাদের
বাড়ির সদস্যরাও একাজে সাহায্য করেছেন। তাছাড়া ইডিটিং এর ক্ষেত্রেও বিভিন্ন
কোয়ালিটির মোবাইল এবং ক্যামেরায় তোলা ক্লিপ নিয়ে কাজ করাটাও যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু
ইডিটিং দেখে আপনার বোঝার উপায় থাকবেনা যে আলাদা আলাদা কোয়ালিটির ক্লিপ ব্যবহৃত
হয়েছে। ছবিতে ইডিটিং বা সম্পাদনার কাজ করেছেন ধ্রুবজ্যোতি শীঠ। ছবিতে ব্যবহৃত বহিরঙ্গ দৃশ্যগুলি লকডাউনের আগে তোলা।
ছবিটির চিত্রনাট্য,
কাহিনী ও পরিচালনা করেছেন মেহেদি হাসান। হত্যাকান্ডের গল্প, জেরা করা, খুনীকে খুঁজে বের করানোর ব্যাপারগুলো
সুন্দরভাবেই ফুটে উঠেছে চিত্রনাট্যে।যেহেতু পরিচালক নিজে উপস্থিত থাকতে পারছেন না
কাজটা ফোন করেই করতে হচ্ছে তাই কাজটার জটিলতাও বেশি।লকডাউনে দাঁড়িয়ে অনেক সমস্যা
উপেক্ষা করেও পরিচালনার যথেষ্ট দক্ষতার দাবী রেখেছেন পরিচালক মেহেদি হাসান।
ইডিটিং এর পাশাপাশি
আবহসঙ্গীতের কাজ করেছেন ধ্রুবজ্যোতি শীঠ। আবহসঙ্গীত
নির্বাচনও ছিল যথেষ্টই মানানসই।
ব্যবসায়িক ঝামেলা,
জুয়া খেলে টাকা উড়িয়ে শেষ করা, চিটফান্ড কোম্পানি ডুবে যাওয়া, একটি পারিবারিক খুন
(রায় পরিবার) ও জেরা করে খুনী খুঁজে বের করা।সংক্ষেপে বলতে গেলে এই নিয়েই গল্পের
বুনন।পুরো গল্পের বর্ণনা করা আর ঠিক হবেনা কারণ যারা এখনও এই ছবিটি দেখেননি তাদের জন্য
হয়তো একটু ছবিটির আকর্ষণ কমে যেতে পারে।
'রায়ভিলা
হত্যাকান্ডে' অভিনয় করেছেন অমিয়
সরকার, দীপঙ্কর দত্ত, ফাল্গুনী সরকার (মৌ), কেদারনাথ ব্যানার্জী, মন্দিরা দাস (পিউ), মেহেদি হাসান, পার্থ মন্ডল, প্রত্যয় মন্ডল, শেখর সরকার এবং শুভম ভাস্কর(কমি)। কম
বেশি প্রায় প্রত্যেকেই ভালো ও সাবলীলভাবেই অভিনয় করেছেন।মুখের এক্সপ্রেশন প্রত্যেকেরই
ছিল একদম প্রাকৃতিক।এক কথায় এই ছবি দেখলে আপনার মনে হবেনা যে এটা লকডাউন ফিল্ম। লকডাউনের আবহে মালদা থেকে নির্মিত এই ফিল্মটি লকডাউনে নির্মিত অনেক ফিল্মের থেকেই
এগিয়ে, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই।আধ ঘন্টার এই ফিল্মটি আপনারও ভালো লাগবে তা বলাই বাহুল্য। এই থ্রিলার ফিল্মটি এক্ষুণি দেখে ফেলুন নীচের লিঙ্কটিতে গিয়ে।
প্রতিবেদন- অমিত দে


Post a Comment