খাবারের সরস গপ্পো। পয়লা বৈশাখে দুই বাংলার একমাত্র বই হিসেবে প্রকাশ পেল 'নোলা'
এই প্রথমবার পয়লা বৈশাখ অতিক্রম করলো একরাশ নিস্তব্ধতা নিয়ে। পয়লা বৈশাখের দিন ছিলনা কোনো জাঁকজমকতা। ছিলনা কোনো আড়ম্বর আয়োজন। দুই বাংলার প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ চলতি বছরে বয়ে নিয়ে এলো দুঃখের সমাহার। হালখাতা থেকে মিষ্টিমুখ সকল প্রকার সুখ থেকে বঞ্চিত ছিল বাঙালি সমাজ একটা রোগের কাছে। তবুও প্রতিটি অবস্থা আমাদের মেনে নিতে হবে। যাইহোক করোনার আক্রমণের মাঝেও সুখবর ভেসে এলো বুকফার্ম পাবলিশার্স থেকে। বাংলা নববর্ষে যখন কোনো বই প্রকাশ পাচ্ছে না তারমধ্যেই এক ব্যতিক্রমী প্রয়াস দেখা গেল৷ ই-বুক আকারে সরাসরি প্রকাশ পেল কৌশিক মজুমদারের লেখা খাবারের ইতিহাস নিয়ে গবেষণাগ্রন্থ 'নোলা'৷ এটি এবারের বাংলা নববর্ষের একমাত্র প্রকাশিত বই৷ বাংলায় এই প্রথমবার সরাসরি প্রকাশিত হলো ই-বুক।
খাবার নিয়ে অনবদ্য এক বই হলো 'নোলা'। বইয়ের ডালে ভাতে পাতায় পাতায় রোজকার চপমুড়ি, রসগোল্লা, জিলিপির পাশে অনায়াসে জায়গা করে নিয়েছে কে এফ সি, ম্যাকডোনাল্ড, ডায়না স্টেক এমনকি ম্যাগিও৷ মেয়োনিজ আর লি পেরিনের সস মিশে গেছে সাড়ে বত্রিশ ভাজার সঙ্গে। একশো বছরের পুরানো ডিমের অনুপান হিসেবে রয়েছে মার্টিনি-শেকেন, নট স্টার্ড।
খাবার নিয়ে অনবদ্য এক বই হলো 'নোলা'। বইয়ের ডালে ভাতে পাতায় পাতায় রোজকার চপমুড়ি, রসগোল্লা, জিলিপির পাশে অনায়াসে জায়গা করে নিয়েছে কে এফ সি, ম্যাকডোনাল্ড, ডায়না স্টেক এমনকি ম্যাগিও৷ মেয়োনিজ আর লি পেরিনের সস মিশে গেছে সাড়ে বত্রিশ ভাজার সঙ্গে। একশো বছরের পুরানো ডিমের অনুপান হিসেবে রয়েছে মার্টিনি-শেকেন, নট স্টার্ড।
এককথায় খাওয়াদাওয়া আর তার ইতিহাস জানার নতুন চাবিকাঠি হলো এই বই। এমনকি খাবারের রঙিন দুনিয়াতে হারানোর ঠিকানা। শুধু খাবার খেলেই তো হয়না৷ পাশাপাশি জানতে হয় সেই খাবার উৎপত্তির কথা ও খাবারের নানান ইতিবৃত্ত। এক একটা খাবারের নেপথ্যে লুকিয়ে রয়েছে অজানা সব রহস্য কথা৷ চেনা খাবারকে নতুন চোখে দেখতে ও চেখে দেখতে সাহায্য করবে এই বই। বলা চলে খাওয়াদাওয়া আর তার ইতিহাস নিয়ে ক্রসওভারের হদ্দমুদ্দ হলো এই বই৷
'নোলা' শিরোনামের এ বইটির ভূমিকা লিখেছেন ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ী। যাকে লোকে বেশি করে ফুডকা বলেই চেনেন৷ ইউটিউবের জনপ্রিয় ফুড ব্লগিং অনুষ্ঠান 'ফুডকা' যেখানে ফুডকার চরিত্রে তিনি পারফর্ম করেন ও তাঁর ভাইপোর চরিত্রে থাকেন মীর। ফুড ব্লগিং এ ইউটিউবে মাঝেমধ্যেই ট্রেন্ডিং এ চলে আসে 'ফুডকা'। কয়েকমাস আগে ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীর 'ফুডকাহিনী' বলে একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁকে হঠাৎ করেই কৌশিকবাবু একদিন বলেন যে "ইন্দ্রজিৎ দা, আমি কিন্তু একটা বই লিখছি, তবে সেই বইয়ের ভূমিকা কিন্তু তোমায় লিখতে হবে।" কৌশিকবাবুর কথাটা তাঁর কাছে নিছকই ঠাট্টা বলে মনে হয়েছিল। তিনি এ প্রসঙ্গে ভূমিকাতে লিখেছেন "খানিকক্ষণের জন্য আমি বুঝতে পারিনি যে কৌশিকের মাথাটা কি শোকে-তাপে একদমই গেছে, নাকি আমার সঙ্গে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করছে, সত্যিই বুঝতে পারিনি, বিশ্বাস করুন! এইবার হল মজাটা। কদিন পরে বুঝলাম, কৌশিক ব্যাপারটা ঠাট্টার ছলে নয়, সিরিয়াসলি বলেছে৷ আরে আমি যার লেখা পড়ে নিজের লেখা লিখছি, আমি লিখব তাঁর বইয়ের ভূমিকা! এ পাগল না মাথা খারাপ? কিন্তু অবস্থা দেখুন। আমাকেই তো লিখতে হচ্ছে।"
বাঙালির কাছে সবচেয়ে বড়ো আনন্দের বিষয় হলো পয়লা বৈশাখে দুই বাংলাতে এই বছর হয়নি কোনো বইপ্রকাশ। তবে বুকফার্ম লকডাউনের মাঝেও ছেড়ে দেয়নি নিজেদের হাল৷ নিজেদের পালতোলা নৌকাতে হাওয়া ভরে তারা এগিয়ে চলেছে। লেখক কৌশিক মজুমদারের লেখা এই বইটি বাংলাভাষাতে ফুড ব্লগিং করার জন্য বিভিন্ন রকম আইডিয়া জোগাতে পারে। খাবার নিয়ে নিত্যনতুন ভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে এ বইতে। আজই মজার ছলে খাবারের বিশ্বে পাড়ি জমাতে সংগ্রহ করে নিতে পারেন এই বই।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment