Header Ads

পণপ্রথা ও ইভটিজিং এর শিকার অজস্র নারীর সম্মান ফিরিয়েছেন বঙ্গসন্তান শুভজিৎ সার


নারীদের সম্মান রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সকল সুস্থ মনের মানুষদের। বিশেষ করে পুরুষদের। প্রতিটি নারী আমাদের কাছে মা-বোনের মতো। এই পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ আমরা মা ছাড়া কখনো পাইনা। সারা দেশে প্রতিদিন বেড়ে চলেছে নারীদের ওপর অত্যাচার। গ্রাম থেকে শহর কোনো স্থানই এখন নারীদের জন্য নিরাপদ নয়। নারী ধর্ষণ, নারী পাচারের মতো ঘটনা বর্তমান ভারতের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। সারা দেশজুড়ে নারী নিরাপত্তা এখন প্রশ্নের মুখে। 


নারীদের সম্মান নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে। যারা নারীদের হত্যা করছে বিনা দোষে। যারা নারীদের ধর্ষণ করছে। তারা সকলে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কোনো শাস্তি পর্যন্ত হচ্ছেনা।  আইন-কানুন সব বিক্রি হয়ে গেছে আজ। নারীরা বর্তমানে অসহায়। কেবল নারীদের ধর্ষণ বা পাচারই নয়, আরো অনেক ভাবে অত্যাচার করা হয়। আজও নারীরা মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার৷ কম বয়সে তাদের সমস্ত স্বাধীনতা হরণ করে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়। কখনো নারীরা পণপ্রথার বলি, কখনো ইভটিজিং এর শিকার, কখনো তাদের ঠিকানা হয় যৌনপল্লী। 

নারীজাতির সম্মান রক্ষার্থে এগিয়ে এসেছেন বঙ্গসন্তান বাঁকুড়া জেলার শুভজিৎ সার। যিনি দীর্ঘদিন ধরে বাল্যবিবাহ, পণপ্রথা ও ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছেন। হাজার বাঁধা-বিপত্তিরও সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। এমনকি মার পর্যন্ত সহ্য করতে হয়েছে তাকে। একবার তাকে মেরে তার আঙুল ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছিল। তবুও তিনি এগিয়ে চলেছেন নারীদের সামাজিক উন্নয়নের জন্য। পণপ্রথা, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিং এর শিকারগ্রস্ত নব্বই থেকে বিরানব্বই জন নারীকে তিনি উদ্ধার করেছেন৷  

নারীজাতির সম্মান ফেরাতে তিনি হাতে কলম তুলে নিয়েছেন। নারীদের নিয়ে তিনি বিভিন্ন কবিতাও লিখেছেন। সমাজের সামনে নারীর বঞ্চনার করুণ চিত্র ফটোগ্রাফির মাধ্যমে তুলে আনেন তিনি৷ তার লেখা 'নারী তোমার জন্যই' শিরোনামের একটি কবিতা উল্লেখ করা হলো- 

জন্ম থেকে মৃত্যু 
নীরব চেতনা থেকে মুক্তির পথ, 
হতচ্ছাড়া জীবনে
নুতন করে পথ চলার আশ্বাস
আজ তোমার জন্যই। 
সব কষ্ট সহ্য করে 
শুকনো খরা মাটিতে ফুটেছে নুতন কুঁড়ি, 
মুছে গেছে সব আবেগ 
খরস্রোতা নদীতে আজো ও বাস হয়। 
পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীবন 
আজ পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়
তোমার জন্যই। 

বাংলার তরুণ সমাজসেবী শুভজিৎ সারের এমন মহৎ কাজ বাংলাকে নতুন আলো দেখাবে৷ নারীদের সম্মান ফিরিয়ে দিতে তিনি বদ্ধপরিকর। তিনি একগুচ্ছ মহান কাজের সাক্ষী থাকলেও তার জীবনে অনেক দুঃখও এসেছে। তিনি অল্প বয়সেই তার মাকে হারিয়েছেন। তিনিই একমাত্র বোঝেন মাতৃহারা হওয়ার যন্ত্রণা কতটা কষ্টের। প্রতিটি বঙ্গ নারীদের তিনি মা-বোনের মতো সম্মান করেন। তিনি ২০১১ সাল থেকে শুরু করেছেন নারীদের জন্য একটি কঠিন লড়াই। তিনি এ লড়াইয়ের যুদ্ধক্ষেত্রে কতটা সফল হবেন তা ভাগ্যই বলবে। কিন্তু লড়াইয়ের ওপর বিশ্বাস রাখলে সাফল্যের রাস্তা কেউ পারেনা আটকাতে। তিনি যেভাবে লড়ে চলেছেন তাতে সাফল্য অনেকটাই নিশ্চিত। আজ শুভজিৎ সারের মতো একজন তরুণ ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে সমাজের জন্য কাজ করছেন। আগামীদিনে তাকে দেখে আরো অজস্র বঙ্গসন্তানেরা এগিয়ে আসবেন।

প্রতিবেদন-সুমিত দে


No comments