Header Ads

'এভাবেই গল্প হোক' ছবির মুক্তির আগে খোলামেলা আড্ডায় ধরা দিলেন পরিচালক রোহন সেন


মুক্তির দোরগোড়ায় বাংলা ছবি 'এভাবেই গল্প হোক'। ছবি মুক্তির আগে লিটারেসি প্যারাডাইসের সাথে খোলামেলা আড্ডায় বিভিন্ন প্রশ্ন-উত্তরে ধরা দিলেন এই ছবির পরিচালক রোহন সেন। সেই আড্ডার খুঁটিনাটি তুলে ধরা হলো আপনাদের জন্য।


লিটারেসি প্যারাডাইস- টলিউডের সর্বকনিষ্ঠ পরিচালক হিসেবে আপনি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি নির্মাণ করলেন। এই ব্যাপারটা আপনার কেমন লাগছে?

রোহন সেন- খুবই ইন্টারেস্টিং একটি ব্যাপার। আমি তো অনেকদিন আগের থেকেই পরিকল্পনা করছি যে একটা একটা বড় ছবি করবো। কয়েকজনকে অ্যাসিস্ট করার পর, বেশ কিছু শর্টফিল্ম বানানোর পর এটা আমার মনে হয়েছিল। আমার বানানো শর্টফিল্মগুলো কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিলেক্ট হয়। আমি সম্প্রতি একটি শর্টফিল্মের জন্য বেস্ট ডিরক্টর আর বেস্ট ফিল্মের অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছি। সেইসব হওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল যে একটা বড় ছবি বোধহয় আমি বানাতে পারবো। তারপরেই এই উদ্যোগটা নেওয়া৷ এখন ছবিটা রিলিজের মুখে। তো আমার বেশ ভালোই লাগছে। একটু টেনশনে আছি যে ছবিটার কী হবে বা না হবে। ছবির ট্রেলার অলরেডি বেরিয়ে গেছে ৷ ট্রেলারটি বেশ ভালো রেসপন্স পেয়েছে। সব জায়গাতে এক লাখের ওপর ভিউ হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে ভালোই যাচ্ছে ৷       

লিটারেসি প্যারাডাইস- আপনার প্রথম ছবি এভাবেই গল্প হোক রিলিজ করতে চলেছে। ছবিটি নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

রোহন সেন- ছবিটি নিয়ে তো বেশ আশাবাদী কারণ ফিল্মটি আমরা যেভাবে বানিয়েছি, প্রথমত ছবিটা একটা মানুষের জীবনের গল্প। যেখানে প্রত্যেকটা মানুষ নিজেদের মধ্যে গল্পটা রিলেট করতে পারবে। সেই জায়গা থেকে আমি যদি বলি তাহলে ছবিটা নিয়ে অবশ্যই বেশ একটা আশা তো আছেই৷ বাকীটা তো দর্শক ছবিটা দেখার পরে কথা বলবে। তবে এটুকু বলতে পারি যে দর্শক দুই ঘন্টা ধরে ছবিটা দেখে হল থেকে কিছু নিয়ে বেরোবে৷ কারও হয়তো জীবনের ফিলোজপিটাও বদলে যেতে পারে। 

এভাবেই গল্প হোক ছবির একটি দৃশ্য
লিটারেসি প্যারাডাইস- এই ছবির ভাবনাটা আপনার কীভাবে আসে?  

রোহন সেন- আমি চেয়েছিলাম একটা ছবি করবো, একটা গল্প বলবো যেটা মানুষ বা আমরা রিলেট করতে পারি অর্থাৎ আমাদের চারপাশে যেটা হয়ে থাকে৷ সেইভাবেই ভাবনাটা আসে যে একটা এমন গল্প বলবো যেটা কোনো নির্দিষ্ট Age group নয়, পুরো Age group কেই রিলেট করতে পারবে। যেমন একটি পিরিয়ড Group এর দর্শকেরা, ছবিতে প্রেম চলছে তারা তখন ভাবছে এটা তো আমরা করি৷ একটা বিবাহিত দম্পতি রিলেট করতে পারবে, তাদের যে ক্রাইসিসটা হয় তাদের বিয়ের পর বা যাদের ষাট বা সত্তর বছরের কাছাকাছি বয়স তারা ভাববে যে এই জিনিসগুলো তো আমাদের সব হয়ে গেছে। এরপর ছবিটা কোথাও না কোথাও গিয়ে হেরে না যাবার কথা বলে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন পয়েন্ট আসে আমরা ভাবি যে জীবনে আমাদের কিছু হলো না। বোধহয় আমাদের জীবনটা শেষ হয়ে গেল৷ কিন্তু সেখান থেকেও একটা নতুন কিছু গল্পের শুরু হয়। সেজন্যই ছবির নাম 'এভাবেই গল্প হোক'।      
                    
লিটারেসি প্যারাডাইস- ছবির গল্পটা সংক্ষেপে যদি একটু বলেন?  

রোহন সেন- ছবির গল্পটা আমি আগের কথার থেকেই বলছি যে ছবির গল্পটা হলো এমন মানুষদের গল্প যারা জীবনের ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা কারও সাথে শেয়ার করতে পারেন না৷ অনেক মানুষ কারও সাথে শেয়ার করতে না পারা ঘটনাগুলো লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করে। কেউ সেটা ছবি বানানোর মাধ্যমে প্রকাশ করে৷ কেউ তাদের না বলা কথাগুলো যারা ছবি বানায় তাদের মাধ্যমে বলে৷ আবারো বারবার করে বলতে চাই যে ছবিটি কোথাও না কোথাও গিয়ে আমাদের গল্প কিন্তু শেষ হয়না। আমাদের জীবনের গল্প চলতেই থাকে। কোথাও না কোথাও গিয়ে আমাদের জীবনে জটিল সময় আসে। আমাদের প্রচন্ড স্ট্রাগল করতে হয়। অনেক কিছু বিপত্তি আসে কিন্তু সেগুলো অতিক্রম করেও সেখান থেকে নতুন গল্পের শুরু হয়। সেজন্যই আমাদের এই ছবির গল্প কমপ্লিট ও ইনকমপ্লিট স্টোরির মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়৷  

এভাবেই গল্প হোক ছবির একটি দৃশ্য
লিটারেসি প্যারাডাইস- 'এভাবেই গল্প হোক' সমাজের কাছে কী বার্তা দিতে পারে বলে আপনার মনে হয়? 
    
রোহন সেন- 'এভাবেই গল্প হোক' সমাজের কাছে খুবই একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে পারে বলে আমার মনে হয়। যেটা আমি এক্ষুণি বললাম। আবারো বলছি যে আমাদের জীবনের যে গল্পটা সেটা হেরে যাওয়ার গল্প নয়৷ আমাদের প্রত্যেকের জীবনে আমরা কেউই হারিনা। কোথাও না কোথাও গিয়ে আমাদের মনে হয় যে আমাদের জীবনে কিছু হলো না, আমরা একেবারেই শেষ হয়ে গেলাম। সেখান থেকেও একটা নতুন গল্পের শুরু হয়। কিছু গল্প থাকে যেটা অসমাপ্ত থেকে গিয়েও অন্য ভাবে শেষ হয়। আবার কিছু গল্পের শুরু হয় সমাপ্ত হওয়ার জন্যই। সবচেয়ে বড়ো কথা হলো আমরা জীবনটাকে যে চোখে দেখি সেটাকে কিন্তু নতুন করে দেখাতে শেখাবে 'এভাবেই গল্প হোক'।          
            
লিটারেসি প্যারাডাইস- বাংলা ছবির দর্শকদের 'এভাবেই গল্প হোক' সম্পর্কে কী বলতে চান?

রোহন সেন- বাংলা ছবির দর্শকদের 'এভাবেই গল্প হোক' সম্পর্কে একটা কথাই বলতে চাই যে আপনারা হলে গিয়ে ছবিটা দেখুন। আমি এটুকু বলতে পারি যে আপনারা ছবিটি দেখে হল থেকে অনেক কিছু নিয়েই বেরিয়ে আসতে পারবেন৷ ছবিটার মধ্যে হয়তো অনেক ট্র্যাকস্ আছে। কিন্তু ছবিটার মধ্যে একটাই বক্তব্য আছে। সেই মূল বক্তব্যটা আপনারা নিজেদের মধ্যে সহজে মেলাতে পারবেন। ছবিটি দেখে আপনাদের নিজেদের জীবন সম্পর্কে বুঝতে পারবেন যে এভাবেও তো জীবনটাকে উপভোগ করা যেতে পারে। 


প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments