Header Ads

এ লজ্জা রাখবো কোথায়? ভারত যখন মাস্টারদাকে ভুলতে বসেছে সেখানে রাশিয়া তাঁকে স্মরণ করছে


ভারত যখন মাস্টারদা সূর্য সেনকে ভুলতে বসেছে তখন রাশিয়ার মতো একটি দেশ স্মরণ করলো মাস্টারদা সূর্য সেনকে। ভারতের রাশিয়ান অ্যাম্বেসির অফিশিয়াল টুইটার পেজে এক টুইটের মাধ্যমে ভারতীয়দের মনে করালো মাস্টারদা সূর্য সেনের কথা। আজকে ভারত সরকার সাভারকারের মতো ব্যক্তি যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য কিছুই করেনি উল্টে ব্রিটিশ পুলিশকে সাহায্য করতো সেইসব ব্যক্তিদের বীর উপাধি দিচ্ছে। অথচ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্যের ফাইল প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে ভারত সরকার৷ ২০১৮ সালে কোনো এক মন্ত্রী মাস্টারদা সূর্য সেনের জন্মদিনে মাস্টারদা নিয়ে কটূ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেন মাস্টারদা সূর্য সেন বাংলাদেশি তার জন্মদিন নিয়ে অতো ভারতীয়দের মাতামাতি করার প্রয়োজন নেই৷ ২০১৭ সালে কোনো এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর ফরমান জারি করেছিলেন৷ ২০১৮ সালে ত্রিপুরাতে কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের মূর্তি ভাঙ্গা হয়েছিল। এই ঘটনার কিছুদিন আগে কলকাতায় কোনো এক রাজনৈতিক দল কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙ্গেছিল। ২০১৯ সালে জে.এন.ইউতে কোনো এক রাজনৈতিক দলের পান্ডারা স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি ভেঙ্গেছিল। 


আজকে ভারতবর্ষের প্রতিটি জায়গায় মহাপুরুষদের আত্মারা আক্রান্ত। আজকে বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম কে কোনো কোনো মুখোশধারী মানুষ মুসলিমদের কবি বলে সম্বোধন করেন। জাপানে একজন বিখ্যাত বাঙালি রাধা বিনোদ পালের মূর্তি রয়েছে। তাঁর নামে রাস্তা পর্যন্ত রয়েছে জাপানে। অথচ ভারতবর্ষের আশি শতাংশ মানুষ তাঁর নাম পর্যন্ত শোনেননি৷ এগুলোই আমাদের ভারতবর্ষের সংকট। আজকে বাঙালি মহাপুরুষরা বিস্তৃতির পথে৷ আজকে দেশজুড়ে বাঙালিদের ওপর অত্যাচার চলছে ৷ 

মাস্টারদা সূর্য সেন একজন বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী। যিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যার আদর্শে পরাধীন ভারতবর্ষে দেশের অজস্র তরুণ-তরুণীরা অনুপ্রাণিত হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে লড়াই করেছিল। যিনি দেশের জন্য শহীদ হয়েছিলেন। স্বাধীনতার জন্য যে মানুষটি নিজের প্রাণ বিসর্জন করতে দ্বিধা করলেন না। আজকে স্বাধীন ভারতবর্ষ  তাদের স্মরণ করার কথা চিন্তা করছে না। এটাই কী তাহলে নতুন ভারতবর্ষ,যে ভারতবর্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামকে মুছে ফেলা হয়? এমন ভারতবর্ষ তো স্বাধীনতা সংগ্রামীরা গড়তে চায়নি। তাঁরা চেয়েছিল এমন একটা ভারত যে ভারত অর্থনীতি, সমাজ, মনুষ্যত্ব, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সব বিষয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর থেকে এগিয়ে থাকবে৷ স্বাধীনতার সত্তর বছর পরেও সেই ভারতবর্ষ গড়া স্বপ্নই থেকে গেল৷ 

রাশিয়ার মতো দেশ যেখানে মাস্টারদা সূর্য সেনের নাম স্মরণ করছে সেখানে আমাদের ভারতবর্ষ শুধু ধর্ম নিয়েই মেতে উঠছে। মেকি দেশপ্রেম নিয়ে গর্ব করছে। লোকভুলানো দেশপ্রেমের বাস্তবে কোনো মূল্য নেই৷ আসল দেশপ্রেম হলো সেটাই যে দেশপ্রেম দেশের মানুষকে মনুষ্যত্ব শেখাবে, সব ধর্মই যে সমান তার কথা বলবে, সকল স্বাধীনতা সংগ্রামীকে শ্রদ্ধা জানাবে। কেবল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ, ক্রিকেট ও বলিউডের প্রতি সম্মান দেখানোকে দেশপ্রেম বলেনা। দেশপ্রেম শিখতে হয়, দেশপ্রেম কখনো জোর করে শেখানো যায়না। 

রাশিয়ার মতো দেশ মাস্টারদা সূর্য সেনকে স্মরণ করছে যার জন্য একদিকে যেমন সকল ভারতবাসীর লজ্জা পাওয়া উচিৎ। অন্যদিকে আপনার আত্মসম্মান বলে যদি কিছু থাকে তাহলে রাশিয়ার মতো দেশ একজন বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম স্মরণ করছে। এর জন্য বাঙালি তথা ভারতীয়দের গর্ব হওয়া উচিৎ।

2 comments:

  1. Ki comment korbo thik bujhte parchina, e lojja rakhbo kothai

    ReplyDelete
  2. The National Congress , after independence drafted the indian history (test book) such a way that the main credit goes to Gandhiji and the Nehru families. J.L.Nehru even termed Netaji Subhas Chandra Bose as traitor. Similarly Masterda Surja Sen never got the proper recognition from his motherland. Its a very dirty politics which goes on and on and today the main indian politics is controlled by strong and powerful lobby of hindi speaking people. They never give any space for Bengali people in politics that much I can say.

    ReplyDelete