Header Ads

সিঙ্গাপুরে জগদ্বিখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড U2 তাদের অনুষ্ঠানে সম্মান জানালো ‘বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত’ বেগম রোকেয়াকে



সিঙ্গাপুরে জগদ্বিখ্যাত আইরিশ ব্যান্ড U2, তাদের অনুষ্ঠান চলাকালীন বিভিন্ন দেশের দুনিয়া বদলে দেওয়া কিংবদন্তী নারীদের সম্মান জানায়। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলার গর্ব এক মহিলা। বাংলার নারীদের শৃঙ্খলমুক্তির পুরোধা বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন। তাঁকে ‘বাঙালি নারী জাগরণের অগ্রদূত’ বলা হয়।


সুফিয়া ও তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের মেয়েরা যে ’৫০-এর দশকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পক্ষ নিয়েছিলেন, আমাদের মনে রাখা দরকার যে তার জন্য যাঁর অবদান সর্বাধিক, তিনি হলেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। আমরা তাঁকে এক জন কালোত্তীর্ণা লেখিকা, সমাজসংস্কারক এবং নারীশিক্ষার পথিকৃৎ বলে জানি। কিন্তু যেটা আমরা সচরাচর স্মরণ করি না, সেটা হল শিক্ষায়তনে বাঙালি মুসলমান মেয়েদের মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের অধিকার প্রায় তাঁর একার সংগ্রামে অর্জিত হয়েছিল।

১৮৮০ সালের ৯ই ডিসেম্বর, রংপুর জেলার পায়রাবন্দের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম জমিদার বাড়ির ঘর আলো করে আসেন বেগম রোকেয়া। কিন্তু পরবর্তীতে এই মহান মহীয়সী যে আমাদের সমাজটাও আলোকিত করে তুলবেন, তা কিন্তু কেউ ভাবতেও পারেনি। বেগম রোকেয়ার পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের ছিলেন দিনাজপুর জেলার সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তি। আর তাঁর মাতা রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী। তাঁরা দুজনেই ছিলেন বেশ উচ্চবংশীয় এবং জমিদার শ্রেণিভুক্ত। তাই তো পায়রাবন্দের জমিদারি সম্পর্কে বেগম রোকেয়া বলেন,

“ আমাদের অবস্থা সচ্ছল ছিল- আমরা প্রায় সুখে খাইয়া পরিয়া গা ভরা গহনায় সাজিয়া থাকিতাম.. আমাদের এ অরণ্যবেষ্টিত বাড়ির তুলনা কোথায়! সাড়ে তিন বিঘা লাখেরাজ জমির মাঝখানে কেবল আমাদের এই সুবৃহৎ বাটী।”

রোকেয়ারা ছিলেন তিন বোন ও তিন ভাই। রোকেয়ার দুই বোন করিমুন্নেসা এবং হুমায়রা। তিনি ছিলেন মেজ। আর তিন ভাইয়ের মধ্যে আবুল আসাদ শৈশবেই মৃত্যুবরণ করেন। বাকি দুইজন ভাইয়েরা হলেন ইব্রাহীম সাবের এবং খলিলুর রহমান আবু জাইগাম সাবের।

তৎকালীন মুসলিম সমাজে ছিল কঠোর পর্দা ব্যবস্থা। বাড়ির মেয়েরা পরপুরুষ তো দূরে থাক, অনাত্মীয় নারীদের সামনেও নিজেদের চেহারা দেখাতে পারতো না। এমনকি তাদের কণ্ঠস্বর যাতে কেউ না শুনতে পায়, তাই তাদেরকে অন্দরমহলের ভেতরে লুকিয়ে রাখা হত। যদিও বেগম রোকেয়ার পরিবার ছিল খুবই উচ্চ শিক্ষিত এবং সমাজসচেতন, তবুও এই পরিবারে খুব কঠোরভাবে পর্দাপ্রথা মেনে চলা হতো।

তাই তৎকালীন সমাজব্যবস্থা অনুসারে রোকেয়া ও তাঁর বোনদের কখনই বাড়ির বাইরে পড়াশুনা করার জন্য পাঠানো হয়নি। তাঁরা ছিলেন পুরো গৃহবন্দী। বাড়ির ভেতরেই আবদ্ধ অবস্থায় চলতো আরবী ও উর্দু ভাষার পাঠ। কিন্তু বেগম রোকেয়ার বড় ভাই ইব্রাহীম সাবের ছিলেন আধুনিকমনা। তিনি চাননি তাঁর বোনেরা পিছিয়ে থাকুক। তাই তিনি রোকেয়া ও করিমুন্নেসাকে ঘরেই গোপনে বাংলা ও ইংরেজি শেখান।

তিনি সর্বদাই রোকেয়াকে ইংরেজি শেখার জন্য উৎসাহিত করতেন এবং বলতেন, “বোন, এই ইংরেজি ভাষাটা যদি শিখে নিতে পারিস, তা হলে তোর সামনে এক রত্নভাণ্ডারের দ্বার খুলে যাবে।” বেগম রোকেয়া তাঁর 'পদ্মরাগ' উপন্যাসটি বড় ভাইয়ের নামে উৎসর্গ করেছিলেন- “দাদা! আমাকে তুমিই হাতে গড়িয়া তুলিয়াছ।”

যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত বেগম রোকেয়া সম্পর্কে তাঁর ‘বঙ্গের মহিলা কবি’ গ্রন্থে লিখেছেন,

“বঙ্গের মহিলা কবিদের মধ্যে মিসেস আর. এস. হোসায়েনের নাম স্মরণীয়। বাংলাদেশের মুসলমান- নারী প্রগতির ইতিহাস- লেখক এই নামটিকে কখনো ভুলিতে পারিবেন না। রোকেয়ার জ্ঞানপিপাসা ছিল অসীম। গভীর রাত্রিতে সকলে ঘুমাইলে চুপি চুপি বিছানা ছাড়িয়া বালিকা মোমবাতির আলোকে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার কাছে ইংরাজী ও বাংলায় পাঠ গ্রহণ করিতেন। পদে পদে গঞ্জনা সহিয়াও এভাবে দিনের পর দিন তাঁহার শিক্ষার দ্রুত উন্নতি হইতে লাগিল। কতখানি আগ্রহ ও একাগ্রতা থাকিলে মানুষ শিক্ষার জন্য এরূপ কঠোর সাধনা করিতে পারে তাহা ভাবিবার বিষয়।” 

রোকেয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর স্বামী তাঁকে পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চড়ে নিতে আসবেন। কিন্তু তাঁর স্বামী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন এসেছিলেন বিদ্যার জাহাজে করে ৷ যাঁর হাত ধরেই বেগম রোকেয়া পেয়েছিলেন স্বাধীনতার স্বাদ, নিজের প্রতিভাকে বিকশিত করার অফুরন্ত সুযোগ। ১৮৯৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ভাগলপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বেগম রোকেয়া বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ছিলেন আধুনিকমনস্ক, বেগম রোকেয়াকে তিনিই লেখালিখি করতে উৎসাহিত করেন। বিয়ের পর রোকেয়ার আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় পড়ালেখা পুরোদমে শুরু হয় এবং সাহিত্যচর্চার পথটাও তাঁর জন্য খুলে যায়।

১৯০২ সালে ‘পিপাসা’ নামক একটি গল্প লিখে বাংলা সাহিত্য জগতে বেগম রোকেয়া তাঁর পথচলা শুরু করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রচনা ‘Sultana’s Dream’, যার অনূদিত নাম ‘সুলতানার স্বপ্ন’। তাঁর অন্যান্য গ্রন্থগুলো হলো: পদ্মরাগ (১৯২৪), অবরোধবাসিনী (১৯৩১), মতিচুর (১৯০৪)। প্রত্যেকটিতে রয়েছে নারীর অবরোধের কাহিনী। নবনূর, সওগাত, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হত ৷

তাঁর কিছু ব্যঙ্গধর্মী রচনা হলো: ‘পরী-ঢিবি’, ‘তিনকুড়ে’, ‘বিয়েপাগলা বুড়ো’ ইত্যাদি। প্রবন্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ‘ চাষার দুক্ষু’, ‘এন্ডিশিল্প’, ‘লুকানো রতন’ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি লিখেছেন ৬টি ছোট গল্প ও রস রচনা এবং ৭টি কবিতা।

তিনি তাঁর প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাসের মধ্য দিয়ে তিনি নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা আর লিঙ্গসমতার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। হাস্যরস, কটাক্ষ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মাধ্যমে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে নারীর অসম অবস্থান ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর রচনা পড়লেই বোঝা যায় যে তিনি কতটা সমাজ সচেতন ছিলেন।

তাঁর লেখার ধরণ ছিল একদম স্বকীয়। আর প্রকাশভঙ্গীও ছিল অন্যদের থেকে আলাদা। যার ফলে সহজেই তাঁকে সমসাময়িক নারীদের সাহিত্যকর্মের তুলনায় এগিয়ে রাখা যায়। 

১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেনের মৃত্যুর পর বেগম রোকেয়া মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়লেও হাল ছাড়েননি। সাখাওয়াত হোসেনের মৃত্যুর ৫ মাস পর বেগম রোকেয়া ভাগলপুরে ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ নামে একটি মেয়েদের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন৷ কিন্তু কিছুদিন পর ১৯১০ সালে সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় স্কুল বন্ধ করে তিনি কলকাতায় চলে আসেন। সেখানে এসে ১৯১১ সালের ১৫ই মার্চ কলকাতার ১৩ নম্বর ওয়ালীউল্লাহ্ লেনের একটি বাড়িতে তিনি আবারো দ্বিগুণ উদ্যোমে ‘সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’ চালু করেন। প্রাথমিক অবস্থায় এখানে ছাত্রী ছিল ৮ জন। চার বছরের মধ্যেই ছাত্রীসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৪-তে। ১৯৩০ সালের দিকে এটি হাইস্কুলে পরিণত হয়। শুরুতে তাঁর এ সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না। তিনি কলকাতার বেথুন ও গোখেল মেমোরিয়াল প্রভৃতি স্কুলে গিয়ে প্রথমে স্কুল কীভাবে চালাতে হয়, সে সম্পর্কে ধারণা অর্জন করেন।

১৯৩০ সালে তাঁর পরিশ্রমে সেটি একটি উচ্চ ইংরেজি বালিকা বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। তাঁর এই অসামান্য কাজের প্রশংসা করেন ব্রিটিশ- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশিষ্ট নেত্রী সরোজিনি নাইডু। তিনি বেগম রোকেয়াকে একটি চিঠিতে লেখেন, “কয়েক বছর ধরে দেখছি সে আপনি কি দুঃসাহসের কাজ করে চলছেন। মুসলিম বালিকাদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের জন্য আপনি যে কাজ হাতে নিয়েছেন এবং তার সাফল্যের জন্য দীর্ঘকালব্যাপী যে কাজ হাতে নিয়েছেন, তা বাস্তবিকই বিস্ময়কর।”

বেগম রোকেয়া তাঁর জীবন সংগ্রামের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলেন যে শিক্ষা ছাড়া নারীর মুক্তি নেই। কেননা একমাত্র শিক্ষাই পারবে আমাদেরকে যুক্তির আলোয় নিয়ে আসতে নিজেদের প্রাপ্য সম্মান পাওয়ার জন্য শিক্ষার বিকল্প নেই। মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তাঁকে কম গঞ্জনা শুনতে হয়নি। ঘরে ঘরে গিয়ে তিনি মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে আসতে অনুরোধ করতেন। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। অমানুষিক ও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা হাজারের দিকে যায়। তিনি শুধু সমাজ পরিবর্তনের পরিকল্পনাই করেননি, তা বাস্তবায়নও করে দেখিয়েছেন। তিনিই প্রথম বাঙালি নারী, যিনি মেয়েদেরকে আলোর দিকে নিয়ে এসেছেন, তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করেছেন এবং স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার পথ বাতলে দিয়েছেন। তাঁর আদর্শ ছিলেন তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক ও আফগানিস্তান বাদশা আমানুল্লাহ। বাদশা আমানুল্লাহ তাঁর সহধর্মিণী ও শ্বাশুড়ির সহায়তায় মধ্যযুগে আফগান নারীদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসেন। 

বেগম রোকেয়া সবসময় সাম্যের ডাক দিয়ে গেছেন। তিনি পুরুষতান্ত্রিক কিংবা নারীতান্ত্রিক সমাজ গড়তে চাননি। তিনি চেয়েছিলেন সমাজে নারী ও পুরুষ যাতে একসাথে সমান মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে বাঁচে। উনিশ শতকের দিকে যখন মেয়েরা ছিল অবরোধবাসিনী, তখন তিনিই নারী জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, নারীর পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি সবসময়ই বলতেন,

“মেয়েদের এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করিয়া তুলিতে হইবে, যাহাতে তাহারা ভবিষ্যৎ জীবনে আদর্শ গৃহিণী, আদর্শ জননী এবং আদর্শ নারীরূপে পরিচিত হইতে পারে। “

তিনি কখনোই পুরুষকে ছোট করে দেখেননি। তাই তো তিনি লিখেছিলেন,

“আমরা সমাজের অর্ধাঙ্গ, আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কীরূপ? কোনো ব্যক্তি এক পা বাঁধিয়া রাখিলে সে খোঁড়াইয়া খোঁড়াইয়া কতদূর চলিবে? পুরুষের স্বার্থ এবং আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে। তাহাদের জীবনের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য যাহা আমাদের লক্ষ্য তাহাই।” তিনি আরো বলেন, “দেহের দু’টি চক্ষুস্বরূপ, মানুষের সবরকমের কাজকর্মের প্রয়োজনে দু’টি চক্ষুর গুরুত্ব সমান।”

বেগম রোকেয়া ছিলেন একজন দূরদর্শী সমাজ সংস্কারক। তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে পর্যন্ত অন্যের জন্য কাজ করে গেছেন। তাঁর সমাজসেবা শুধু বিদ্যালয় তৈরি করা পর্যন্ত থেমে থাকেনি। বিধবা নারীদের কর্মসংস্থান, দরিদ্র অসহায় বালিকাদের শিক্ষা, বিয়ের ব্যবস্থা, দুঃস্থ মহিলাদের কুটির শিল্পের প্রশিক্ষণ, নিরক্ষরদের অক্ষর জ্ঞান দান, বস্তিবাসী মহিলাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যও তিনি কাজ করে গেছেন। তিনি নিজস্ব জমিদারী থেকে প্রাপ্ত আয়ের বহুলাংশ তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যয় করেন৷ স্কুলের সুপারিনটেডেন্ট ও প্রধান শিক্ষিকা হিসেবেও কোনো পারিশ্রমিক নিতেন না। একদম সাধারণ ও স্বচ্ছ ছিল তাঁর জীবনদর্শন।

গুগল তাঁর ১৩৭তম জন্মদিন(২০১৭ সালে) স্মরণে একটি ডুডল তৈরি করে৷ গুগলের হোম পেইজে গেলেই দেখা গেছে এক জমিদার বাড়ির অন্দরমহলের দৃশ্যপট। সাদা পোশাকের চশমা পরা এক নারী বই হাতে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এক ঝলক দেখেই বোঝা যায় যে ইনি হলেন আমাদের বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।

মহিয়সী বাঙালি নারী হিসেবে বেগম রোকেয়ার অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসনের জন্য “রোকেয়া হল” নামকরণ করা হয়। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও হয় তাঁর নামে। বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে পৈতৃক ভিটায় ৩ দশমিক ১৫ একর ভূমির উপর নির্মিত হয়েছে ‘বেগম রোকেয়া স্মৃতি কেন্দ্র’। এতে অফিস ভবন, সর্বাধুনিক গেস্ট হাউজ, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি ইত্যাদি রয়েছে। স্মৃতিকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের শিশু ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মাত্র ৫২ বছর বয়সে ১৯৩২ সালের ৯ই ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া মৃত্যুবরণ করেন। যেই বিন্দুতে তিনি তাঁর সংগ্রামের পথচলা শেষ করেছিলেন, জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সেই একই বিন্দুতে তাঁর পথচলা থেমে যায়। তাঁর সমাধি উত্তর কলকাতার সোদপুরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক অমলেন্দু দে আবিষ্কার করেন।

ক্ষণজন্মা এই মহিলা সাহিত্যিক ও সমাজসেবী আমাদের যে কী উপকার করেছেন, তা হয়তো কখনো লিখে প্রকাশ করা যাবে না। তাঁর হাত বাড়ানোর কারণেই আজ মেয়েরা অবাধে চলাচল করতে পারছে, ভোট দেওয়ার অধিকার অর্জন করেছে |

বেগম রোকেয়া আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর আদর্শ যাতে আমরা বুকে লালন করে চলতে পারি, নিজেদের কাছে আমরা সেই প্রতিজ্ঞাটাই করব। জয় বেগম রোকেয়া।


1 comment: