একজন বড় ভক্তের শেষ ইচ্ছে পূরণে ছুটে গেলেন সংগীতশিল্পী রূপম ইসলাম
ছেলেটার নাম কিরণ। বয়স ছিল তাঁর উনিশ বছর। পেশায় একজন কলেজ ছাত্র। যার শিরায় শিরায় প্রবাহিত হতো 'ফসিলসে্'র গান। সে ছিল রূপম ইসলামের মস্ত বড়ো ভক্ত। ছেলেটা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। জীবনযুদ্ধে সম্পূর্ণ পরাজিত হতে হয় তাকে। গত শনিবার ইহলোক ছেড়ে পরলোকে পাড়ি দেয় কিরণ। মৃত্যুর আগে তার শেষ ইচ্ছে ছিল রূপম ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করা। সে রূপম ইসলামকে ভগবান মনে করতো।
কিরণের বন্ধুরা কিরণের শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য রূপম ইসলামের টিমের সাথে যোগাযোগ করে। রূপম ইসলাম কিরণের শেষ ইচ্ছেকে সম্মান জানাতে ছুটে যান কল্যাণীর নার্সিং হোমে। কিরণ ফসিলস কনসার্টের নিয়মিত শ্রোতা ছিল। জীবনের অন্তিম সময়ে নিজের ভগবানের হাত ধরে সম্পন্ন হয় তার শেষ ইচ্ছে। ভগবানের হাত জড়িয়ে ধরে শরীরের যন্ত্রণা ভুলে কিছুটা সে সুখ অনুভব করে।
'ফসিলস্' এর একজন নিয়মিত শ্রোতার মৃত্যু কিছুটা ভাবিয়েছে রূপম ইসলামকে। তিনি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে প্রচন্ড দুঃখ প্রকাশ করে একটি লেখা পোস্ট করেন। তিনি ঐ ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানান যে শনিবারের অনুষ্ঠানের আনন্দ ম্নান ও অর্থহীন হয়ে যায় তাঁর বড় ভক্ত কিরণের বিদায় নেওয়ার খবরে। তিনি আক্ষেপ করেছেন যে কেন তাদের একক অনুষ্ঠানে কোনোদিনও দেখা হয়নি?
রূপম ইসলাম তাঁর টিমের কাছে কিরণের কথা জানতে পেরে তাকে দেখতে বেরিয়ে পড়েন। রওনা কালে তিনি চিন্তা করেন যখন কিরণের সাথে তাঁর দেখা হবে তখন তিনি কিরণকে কী বলে স্বান্তনা দেবেন? কী ভাবে বলবেন যে আগামী কনসার্টে আবার তাদের দেখা হবে? কিরণের সাথে দেখা হওয়ার পর কিরণ তাঁর হাত ধরে বলেছিল যে তার জীবনের সমস্ত স্বপ্ন এইমাত্র সত্যি হয়ে গেলো।
কিরণের চলে যাওয়ার ঘটনা রূপম ইসলাম আজীবন মনে রাখবেন। তিনি ঠিক করেছেন তাঁর পরবর্তী অ্যালবামগুলো তাঁর সকল চলে যাওয়া বন্ধুদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। তিনি তাঁর অ্যালবামে লিখতে চান এই মানুষদের নাম। যার ফলে তাঁর গোটা জীবন জুড়ে এই মানুষগুলো অমর হয়ে থাকবে।
প্রতিবেদন- সুমিত দে
Post a Comment