Header Ads

জীবনকে সুন্দরভাবে উপলব্ধি করতে হলে দেখে ফেলুন 'বিদায়'

অবশেষে মুক্তি পেল সৌরদীপ্ত চৌধুরী পরিচালিত নতুন শর্টফিল্ম 'বিদায়'। সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারধর্মী ছবি থেকে বেরিয়ে একদম অন্য ঘরানার ছবি নির্মাণ করলেন তিনি। 'বিদায়' ছবিতে মানুষের জীবনকে অনাবৃত করা হয়েছে। ছবিতে এমন একটা বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে যার সাথে সকল মানুষের জীবন জড়িত রয়েছে। 


ছবির গল্প হলো একজন বৃদ্ধ মৃত্যু কবলে৷ স্ত্রী মারা গেছে বহুদিন হয়ে গেছে। তার বর্তমানে সেবাশুশ্রূষা করে তার একমাত্র নাতনি। যার কাছে তার জীবনের গল্প শুনিয়ে মন ভালো হয়ে যায়। তার একটা বাক্স রয়েছে। যে বাক্সটাকে ঘিরে তার নাতনির বিশেষ আগ্রহ। দাদুর কাছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে তার দাদা এসে বারবার বাঁধা দেয়। হঠাৎ একদিন বৃদ্ধ মানুষটি মারা যায়। মারা যাবার পূর্বে একটা চিঠিতে বাক্সের ব্যাপারে লিখে যান। ঐ বাক্সে জমানো ছিল একগুচ্ছ উপহার, চিঠি ও বিয়ের আসবাবপত্র। বৃদ্ধ মানুষটির স্ত্রীর সমস্ত স্মৃতি জমানো ছিল ঐ বাক্সে। ওখানে রাখা চিঠিগুলো থেকে তাদের জীবনের স্মৃতি রোমন্থন পর্দায় ভেসে আসে। তারপর বাকীটা ক্লাইম্যাক্স। সেটা না লিখলেও চলে৷ আপনারা যারা ছবিটা দেখেননি তাদের জন্য ছবির বাকী অংশটা তোলা রইল। 

ছবিতে অভিনয় করেছেন মৃগাঙ্ক বণিক, শ্রুতি কর্মকার, ইপ্সিতা ইন্দ্র, সর্বজিৎ সরকার, অরূপ কুমার পাল ও নিশা গুহ। ছবিতে শ্রুতি কর্মকার ও নিশা গুহের অভিনয় সবার নজর কেড়েছে। এনাদের বাড়িতেই শ্যুটিং হয়েছিল ছবিটি। এনারা দুজন পেশাগত অভিনেত্রী না হয়েও এতো ভালো অভিনয় করেছেন যে একবারও মনে হয়নি যে এনারা পেশাগত অভিনেত্রী নন। অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও বেশ জমিয়ে অভিনয় করেছেন। মৃগাঙ্ক বণিক যে বরাবরই অভিনয়ে দক্ষতার পরিচয় রাখেন। এই ছবির ক্ষেত্রেও তিনি দক্ষতা দেখিয়েছেন। এরপর ইপ্সিতা ইন্দ্র, সর্বজিৎ সরকার, অরূপ কুমার পাল সকলেই সাবলীল অভিনয় করেছেন। 

সচরাচর এরকম শর্টফিল্ম খুব বেশি দেখা যায়না। এ ছবির গল্পে এতোটাই ইমোশন রয়েছে যে আপনাকেও টানবে। ছবির বেশ কিছু সংলাপ ও দৃশ্য চোখে জল নামিয়ে আনার মতো। ছবিতে সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে সায়ন দাসের আবহ সংগীত। সিনেমাটোগ্রাফি ও সম্পাদনার কথা না বললেও চলে কারণ সৌরদীপ্ত চৌধুরী পরিচালনার পাশাপাশি এ দুটো কাজেও ভীষণ তুখোড়। 


রকরুলজ স্টুডিওর ব্যানারে রকরুলজ স্টুডিওর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে পুরো ছবি৷ ছবির সংলাপ অত্যন্ত উন্নতমানের। এ ছবির সংলাপ লিখেছেন সৌরদীপ্ত চৌধুরী ও সবর্ণা সিংহ দেব। সংলাপের পাশাপাশি সৌমিত্র চৌধুরী, সৌগত নন্দী, সাশা ঘোষাল ও মুক্তধারার কণ্ঠে ধ্বনিত রবীন্দ্র সংগীতগুলো ছবিকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে । আর ছবির গল্প তো বলা হয়ে গেছে। সৌরদীপ্ত চৌধুরী ও তার স্ত্রী সৌমিতা গুহ যৌথভাবে জালবুনন করেছেন ছবির গল্পটি। 
      
ছবিতে একটা বার্তায় পাওয়া যায় যে আমাদের জীবন ক্ষুদ্র হলেও এ জীবনের অনেক মূল্য। এ জীবন শেষ হলেও মনে হয় যেন শেষ হয়না৷ 

এবার ছবির ক্লাইম্যাক্সের কথায় আসা যাক। ছবির ক্লাইম্যাক্স অসাধারণ। যা দেখলে অন্তর জুড়াইয়া যায়। ছবির শেষে বিদায় পালাটা যেভাবে দেখানো হয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। এখানে একদম নতুন ভাবনার উদগীরণ করা হয়েছে। সিনেমাপ্রেমী মানুষদের ছবিটি দেখার জন্য খবরের নীচে দেওয়া লিঙ্কটি ব্যবহার করে ছবিটি দেখে ফেলুন। এ ছবি সপরিবারে দেখার মতো৷ মনে রাখবেন এমন ছবি বারবার হয়না। 



প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments