Header Ads

বিস্মৃতি সরিয়ে একনজরে দেখা অগ্নিযুগের বাঙালি শহিদদের

ভারতের স্বাধীনতা লাভের নেপথ্যে যে জাতির কথা উঠে আসে সবার প্রথমে। সেই জাতির নাম বাঙালি। যারা না থাকলে ভারতবর্ষ হয়তো স্বাধীনতার মুখই দেখত না। বাঙালি দেশপ্রেমিকদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা।



স্বাধীনতার পরে কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। আজ বাঙালি জাতিকে প্রতি মুহূর্তে সইতে হয় শুধুই লাঞ্ছনা। হাজারো অপমান সহ্য করে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে বাঁচতে হয় বাঙালিদের। দেশের সবরকম সুবিধা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয় বাঙালিদের। বাঙালির নিজের রাজ্যেও সুখ নেই। রাজনীতির ভয়ংকর অন্ধকার অস্থিমজ্জা ভক্ষণ করছে বাংলাকে। আজকে কেন্দ্র সরকার একের পর এক অফিস বাংলা থেকে অন্যত্র সরিয়ে ভেঙ্গে ফেলছে বাংলার অর্থনৈতিক পরিকাঠামো। 

বাঙালির ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের বিশেষ শ্রেণির মানুষেরা বাঙালির মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দিচ্ছে অন্ধ ধর্মের বিষ। যার ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাংলাতে। আমাদের রাজ্যের একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। বাঙালির উন্নত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কারণেই বাঙালি জাতি সারা বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করেছে। 

ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য শত শত বিপ্লবী আন্দামান সেলুলার জেলে রক্ত জল করে যুদ্ধ চালিয়েছিল। তাদের হৃদয়ে-মননে কেবল একটাই চিন্তা ঘুরপাক খেত যে দেশ কবে স্বাধীন হবে? নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে দেশকে পরাধীনতার বদ্ধ কারগার থেকে মুক্ত করেছিল। অথচ এ পোড়াদেশে বাঙালি জাতির লড়াকু সৈনিকেরা  পেলনা প্রাপ্য সম্মান। ভাবতে অবাক লাগে যে এই সৈনিকদের জন্মদিন নিয়ে আমজনতার মনে নেই কোনো উন্মাদনা। 

নিজেদের পরিবারকে বিসর্জন দিয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের মানুষের মুখে একটু হাসি ফোটাতে যারা লড়াই করলেন। তাদের স্বপ্ন যেন বিফলে যেতে বসেছে। দেশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাত থেকে মুক্তি হলেও এখনও জনতা পায়নি সঠিক স্বাধীনতা। যারা রাতদিন দুটো ভাতের জন্য খেঁটে চলেছে, যারা রাত জেগে দেশ পাহারা দিচ্ছে, যারা অহিন্দিভাষী হয়ে নিজের মাতৃভাষার অধিকার নিয়ে লড়াই করছে তাদের মূল্যায়ন করছে না কেউ।

এসব কথা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রেখে এবার একটা বার্তা দিতে চাই। বর্তমান সময়ে যদি একজন মিলিটারি যদি শহিদ হন তবে তাকে শ্রদ্ধা জানাতে আমরা একদিনের জন্য শহিদ দিবস পালন করি। তারপর ভুলে যায় তাদের। ঠিক সেভাবেই আমরা ভুলে গেছি অসংখ্য বাঙালি বিপ্লবীদের কথা যারা স্বাধীনতা লাভের জন্য ফাঁসিতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিল। আসুন বাংলার দামাল শহিদ বিপ্লবীদের কথা তুলে ধরি। যাদের আজ আমরা হারাতে বসেছি। 

স্বাধীনতার জন্য যেসব বাঙালি বিপ্লবীরা ফাঁসির দড়ি গলায় পরে দেশবাসীকে বিদায় জানিয়েছিলেন তাঁরা হলেন ক্ষুদিরাম বসু, কানাইলাল ভট্টাচার্য,সূর্য সেন, দীনেশ গুপ্ত, প্রদ্যোৎ ভট্টাচার্য, রাজেন্দ্রনাথ লাহিড়ী, রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, নীরেন্দ্রমোহন মুখার্জি, মতিলাল মল্লিক, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, গোপীনাথ সাহা, চারুচন্দ্র বসু, বীরেন্দ্রনাথ দত্তগুপ্ত, বসন্ত বিশ্বাস, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত, প্রমোদরঞ্জন চৌধুরী, সুনীলকুমার মুখার্জি, দীনেশচন্দ্র মজুমদার, সতীন্দ্রনাথ মজুমদার, ফণিভূষণ চক্রবর্তী, নিরঞ্জন বড়ুয়া, নন্দকুমার দে, দুর্গাদাস রায়চৌধুরী, মানকুমার বসু ঠাকুর, চিত্তরঞ্জন মুখার্জি, কালীপদ মুখার্জি, ব্রজকিশোর চক্রবর্তী, অসিতরঞ্জন ভট্টাচার্য, হরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কৃষ্ণগোপাল চৌধুরী, সত্যেন্দ্রচন্দ্র বর্ধন, রোহিণী বড়ুয়া, ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, নির্মলজীবন ঘোষ, কালীপদ আইচ, রামকৃষ্ণ রায়, তারকেশ্বর দস্তিদার, অনন্তহরি মিত্র, সুশীলচন্দ্র লাহিড়ী, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রমুখ। 

আপনি যদি বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করে থাকেন তাহলে এই প্রতিবেদনটি লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে দিন যাতে নতুন করে বাঙালি এনাদের চিনতে শুরু করে।

No comments