Header Ads

বরাক উপত্যকার ভাষা আন্দোলন এবং বাঙালির রক্তে রাঙানো ১৯শে মে


১৯৬১ সালের ১৯ শে মে। শিলচর রেলস্টেশন। দুপুর দুটো আন্দোলনকারীরা কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। মারাত্মক অঘটন বুঝি আর ঘটবে না। কংগ্রেস সরকারের সমস্ত বলপ্রয়োগ বিফলে গেছে। হরতাল সফল হতে চলেছে। পুলিশ মিলিটারি অত্যাচারের মাত্রা একটুখানি কমিয়ে দম নিচ্ছে। মাতৃভাষা জিন্দাবাদ ধ্বনিতে রেলস্টেশন মুখর। বিকেল ৪টার সময়সূচির ট্রেনটির সময় পার হওয়ার পর হরতাল শেষ করার কথা ছিল।




কিন্তু পরিস্থিতি বদলে যায় দ্রুত। দুপুর প্রায় আড়াইটের সময় ন'জন আন্দোলনকারীকে কাটিগোরা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের একটি ট্রাক শিলচর রেলওয়ে স্টেশন কাছ থেকে পার হয়ে যাচ্ছিল। শিলচর স্টেশনে আন্দোলনকারীরা সকলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে দেখে তীব্র প্রতিবাদ করেন। ভয় পেয়ে ট্রাকচালক সহ পুলিশরা বন্দীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর কোনো অসনাক্ত লোক ট্রাকটি জ্বালিয়ে দেয়, যদিও দমকল বাহিনী এসে তৎপরতার সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তারপর প্রায় ২:৩৫ নাগাদ স্টেশনের সুরক্ষায় থাকা প্যারামিলিটারী বাহিনী আন্দোলনকারীদেরকে বন্দুক ও লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। হঠাৎ গুড়ুম্-গুড়ুম্-গুড়ুম্ আওয়াজে শিলচর রেল স্টেশন সচকিত হয়ে উঠল। ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি ছুটে এলো রাইফেল থেকে। সাত মিনিটের ভিতর তাঁরা ১৭ রাউণ্ড গুলি আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে চালায়। রক্তস্নাত হলো শিলচর।একে একে লুটিয়ে পড়ল বীর সত্যাগ্রহীরা। রক্তের ফোয়ারায় শিলচর প্ল্যাটফর্ম লাল হয়ে উঠল। লাল হয়ে গেল কঠিন পাষাণ রেল লাইন। রক্তের আর্তনাদ থেকে সত্যাগ্রহীদের মুখ দিয়ে বেরুল মাতৃভাষা জিন্দাবাদ। সেদিন ১২ জন আন্দোলনকারীর দেহে গুলি লেগেছিল। ১২ জনের মধ্যে ৯ জন ঘটনার দিন এবং পরবর্তী সময়ে আরও দুজন তরুণ তাজা প্রাণ মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

ঘটনার দিন যে ৯ জন শহীদ হন তারা হলেন : কানাই লাল নিয়োগী, চণ্ডীচরণ সূত্রধর, হীতেশ বিশ্বাস, কুমুদ রঞ্জন দাস, সুনীল সরকার, তরণী দেবনাথ, শচীন্দ্র চন্দ্র পাল, সুকোমল পুরকায়স্থ এবং কমলা ভট্টাচার্য। ঘটনার দুদিন পর অর্থাৎ ২১ মে যে দুজন শহীদ হন তাঁরা হলেন : বীরেন্দ্র সূত্রধর এবং সত্যেন্দ্র দেব। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও ২৪ বছর বেঁচে ছিলেন কৃষ্ণকান্ত বিশ্বাস।




সেদিনের সেই শহীদদের মধ্যে ছিলেন ১৬ বছরের কিশোরী। নাম কমলা ভট্টাচার্য। বিশ্বের একমাত্র নারী চরিত্র, যিনি মাতৃভাষার স্বীকৃতির দাবিতে শহীদ হয়েছিলেন। তিনি সবেমাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন, পাশ করলেও সে রেজাল্ট তিনি দেখে যেতে পারেননি। তাঁর ডান চোখের পাশ দিয়ে একটা গুলি মাথায় ঢুকে যায়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

হত্যা নির্যাতন চালিয়ে পুলিশ সেদিন আন্দোলনের গতিরোধ করতে পারেনি। শহীদের লাশ আন্দোলনকারীদের নতুন শক্তিতে উদীপ্ত করে। অভূতপূর্ব গণজাগরণের মুখে অবশেষে নতি স্বীকার করতে হয় কংগ্রেস সরকারকে। ১৯৬০ সালের অসম ভাষা আইনকে সংশোধন করা হয়। ১৯৬১ সালে শহীদের রক্তেভেজা বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষা সরকারী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। অধিষ্ঠিত হয় মর্যাদার আসনে।




ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অসম রাজ্যের অন্তর্গত বাংলাভাষী বরাক উপত্যকার মধ্যে রয়েছে করিমগঞ্জ, হইলাকান্দি, বদরপুর, শিলচর প্রভৃতি বাঙালি অধ্যুষিত শহর। দেশ বিভাগের আগে অবিভক্ত সিলেট জেলাসহ এই বরাকের অধিবাসী বাঙালিরাই পুরো আসাম প্রদেশের নেতৃত্ব দিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় অবশেষে তাদের পরিচয় হয় ভাষীক সংখ্যালঘু হিসেবে। শুধু তাই নয় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বাঙালিরা বার বার উচ্ছেদ আন্দোলনের শিকার হয়েছে। অসমীয়াদের অত্যাচারে কোন জাতিই স্বস্তিতে ছিল না। প্রাচীন ভারতের এ রাজ্যটি আগে থেকেই নানা জনজাতি, উপজাতি বহুভাষা ও ধর্মের সমন্বয়ে গঠিত ছিল। একসময় সেটা উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদে রূপ নেয়। তাদের আগ্রাসী মনোভাবে বাঙালিরা অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যায়।

১৯৬০ সালের এপ্রিলে, আসাম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটিতে অসমীয়া ভাষাকে প্রদেশের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার একটি প্রস্তাবের সূচনা হয়। সংখ্যায় বাঙালিরা অসমের এক বিশাল জনগোষ্ঠী। নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার তাগিদেই তারা অসমীয়াকে সরকারী ভাষা মেনে নিয়ে বাংলা ভাষাকে পাশাপাশি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন শুরু করে। অন্য ভাষাভাষী গোষ্ঠীও বাঙালিদের এ আন্দোলনকে সমর্থন করে। বরাক তীরের বাঙালিরা দৃপ্ত শপথ গ্রহণ করে যে কোন মূল্যে বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার। আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। আসামের খাসিয়া, গারো, বোরো, মিশামী, ডিমসা, মণিপুরী, বিষ্ণুপ্রিয়াসহ সংখ্যালঘু প্রায় জনগোষ্ঠীই এতে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন প্রদান করে। এতে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অসমীয়া উত্তেজিত জনতা বাঙালি অভিবাসীদের আক্রমণ করে। জুলাই ও সেপ্টেম্বরে সহিংসতা যখন উচ্চ রূপ নেয়, তখন প্রায় পঞ্চাশ হাজার বাঙালি হিন্দু ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যায়। অন্য নব্বই হাজার বাঙালি বরাক উপত্যকা ও উত্তর-পূর্বের অন্যত্র পালিয়ে যায়। গোপাল মেহরোত্রার নেতৃত্বে এক ব্যক্তির একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কামরূপ জেলার গোরেশ্বর অঞ্চলের পঁচিশটি গ্রামের চার হাজার ঊনিশটি কুঁড়েঘর এবং আঠান্নটি বাড়ি ধ্বংস ও আক্রমণ করা হয়; এই জেলা ছিল সহিংসতার সবচেয়ে আক্রান্ত এলাকা। নয়জন বাঙালিকে হত্যা করা হয় এবং শতাধিক লোক আহত হয়।




১০ ই অক্টোবর, ১৯৬০ সালের সেই সময়ের আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চলিহা অসমীয়াকে আসামের একমাত্র সরকারী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। উত্তর করিমগঞ্জ-এর বিধায়ক রণেন্দ্রমোহন দাস এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু ২৪ শে অক্টোবর প্রস্তাবটি বিধানসভায় গৃহীত হয়।

বরাক উপত্যকার বাঙালীদের ওপরে অসমীয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে ১৯৬১ সালের ৫ ই ফেব্রুয়ারি তারিখে কাছাড় গণ সংগ্রাম পরিষদ নামক সংগঠনটির জন্ম হয়। আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে। প্রতিবাদ, ধর্মঘট, সভা-সমিতির মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনের দাবানল। সম্মেলন। ৫ ই ফেব্রুয়ারি, করিমগঞ্জ রমণীমোহন ইনস্টিটিউটে কাছাড় জেলা জনসম্মেলন আহ্বান করা হলো। সম্মেলনের একমাত্র দাবি বাংলাকে আসামের অন্যতম রাজ্য ভাষা রূপে মানতে হবে।আসাম সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ১৩ ই এপ্রিলের ভেতর শেষ জবাব চাওয়া হলো। ১৩ ই এপ্রিলের মেয়াদ শেষ হলেও আসাম কংগ্রেস সরকার রইল নিরুত্তর। অতএব সমরে ঝাঁপিয়ে পড়া ছাড়া গত্যন্তর নেই। ঘরে ঘরে সংগ্রাম পরিষদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি হতে লাগল। এক নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত হতে লাগল গোটা কাছাড়। আসাম সরকারের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ১৪ ই এপ্রিল তারিখে শিলচর, করিমগঞ্জ আর হাইলাকান্দির লোকেরা সংকল্প দিবস পালন করেন। বরাকের জনগণের মধ্যে সজাগতা সৃষ্টি করার জন্য এই পরিষদ ২৪ শে এপ্রিল একপক্ষ দীর্ঘ একটি পদযাত্রা শুরু করেছিল। ২ রা মে তে শেষ হওয়া এই পদযাত্রাটিতে অংশ নেওয়া সত্যাগ্রহীরা  প্রায় ২০০ মাইল উপত্যকাটির গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার চালিয়েছিলেন। পদযাত্রার শেষে পরিষদের মুখ্যাধিকারী রথীন্দ্রনাথ সেন ঘোষণা করেছিলেন যে, যদি ১৩ ই এপ্রিল, ১৯৬১ সালের ভিতর বাংলাকে সরকারী ভাষা হিসেবে ঘোষণা করা না হয়, ১৯ শে মে তে তাঁরা ব্যাপক হরতাল করবেন। ১২ ই মে তে আসাম রাইফেল, মাদ্রাজ রেজিমেন্ট ও কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনী শিলচরে ফ্ল্যাগ মার্চ করেছিল। ১৮ ই মে তে আসাম পুলিশ আন্দোলনের নেতা নলিনীকান্ত দাস, রথীন্দ্রনাথ সেন ও বিধুভূষণ চৌধুরী (সাপ্তাহিক যুগশক্তির সম্পাদক) কে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও গ্রেফতার হন ছাত্রনেতা নিশীথরঞ্জন দাস ভাষা আন্দোলনের ডাক গোটা কাছাড়ের চেহারা পাল্টে দিয়েছিল তাই এ গ্রেফতারে প্রত্যেকটি জনপদ গ্রাম যেন বিক্ষোভে আরও ফুঁসে উঠল। সহস্র বলিষ্ঠ কণ্ঠে আওয়াজ উঠল মাতৃভাষা-জিন্দাবাদ। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য গোটা কাছাড় প্রস্তুত হয়ে রইল।

একটি ঐতিহাসিক তারিখ ঘোষিত হলো ১৯ শে মে ১৯৬১ সাল। ছাত্র সমাজের ডাকে করিমগঞ্জ শহরে যে শোভাযাত্রা বের হয় তা নিঃসন্দেহে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সর্বস্তরের মানুষ সেদিন ভুলে গিয়েছিল এ ছিল শুধু ছাত্র সমাজের শোভাযাত্রা। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা যোগ দিয়েছিল মাতৃভাষার ডাকে সেই শোভাযাত্রায়। শাসকগোষ্ঠীও শক্তির পরিচয় দেখাতে পিছপা হননি। সমগ্র জেলার ব্যাটালিয়নের পর ব্যাটালিয়ন সৈন্য দিয়ে ছেঁয়ে ফেলা হল। জারি করা হলো সমগ্র জেলায় ১৪৪ ধারা। রাস্তায় রাস্তায় নামানো হলো মিলিটারি আর টহলদার বাহিনী। সন্ত্রাস জাগিয়ে তোলার অপচেষ্টা শুরু হলো। ১৯ শে মে ভোর চারটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় কাছাড় জেলা সংগ্রাম পরিষদ। যেভাবে হোক ট্রেনের চাকা চলতে দেওয়া হবে না। বিমানঘাঁটিতে বিমানের পাখা ঘুরবে না। অফিসের তালা খুলবে না। ভোর হতেই শত শত সত্যাগ্রহী বসে পড়ল রেল লাইনের ওপর। বিমানঘাঁটিতে রানওয়ের ওপর শুয়ে পড়ল সত্যাগ্রহীরা। সারি সারি দাঁড়াল অফিসের গেটের সামনে। শিলচর, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, পাথারকান্দি, বদরপুর সব কটি জায়গায় সত্যাগ্রহীরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্তব্য পালনে প্রস্তুত।




কতটা স্বতঃস্ফূর্ত ছিল সেদিনের ধর্মঘট তা শোনা যাক লেখক অলক রায়ের ভাষা আন্দোলনে কাছাড়বই থেকে। করিমগঞ্জ রেল স্টেশনে ভোরের ট্রেন আটকাতে সত্যাগ্রহীরা রেল লাইন আগলে বসে পড়ে। কয়েকজন আবার রেল লাইনের ওপর উপুড় হয়ে শুয়েও পড়ে। আচমকা পুলিশ তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল উদ্যত লাঠি হাতে। পেটাতে লাগল। কিন্তু সত্যাগ্রহীদের রেল লাইন থেকে সরাতে পারল না। সত্যাগ্রহীদের স্লোগানে চারদিক মুখর হয়ে উঠল "মাতৃভাষা জিন্দাবাদ"। এবারে আরও নৃশংস হয়ে উঠল কংগ্রেস সরকারের পুলিশ বাহিনী। সত্যাগ্রহীদের শরীর রক্তাক্ত হয়ে উঠল। কিন্তু না, সত্যাগ্রহীদের তাঁরা সরাতে পারেনি। মুখে তাদের মাতৃভাষা-জিন্দাবাদ। ট্রেন আটকাতে যোগ দিয়েছিলো অসংখ্য বাঙালি নারী। সত্যাগ্রহী ভাইদের সঙ্গে তাঁরাও মাতৃভাষার যুদ্ধে শামিল। আর একটি পুলিশ বাহিনী এসে এবার মেয়েদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। মাথায় তাদের রাইফেলের আঘাত পড়তে লাগল। জ্ঞান হারিয়ে দুএকজন লুটিয়ে পড়ল কিন্তু বাকিদের সরানো গেলো না। ওইদিনই দুপুর আড়াইটায় শিলচর স্টেশনে প্রাণ দেন ১১ জন বীর বাঙালি।

ঐতিহাসিক ১৯ শে মে'র কথা প্রচার করতে হবে। এটা বাঙালির গৌরবের ইতিহাস। বাঙালি ভাষার জন্য প্রাণ দিতে পারে। বাংলা ভাষা বড় প্রিয় আমাদের। বাংলা ভাষা বাঁচাতে ও বাঙালির অধিকার আদায় করতে ১৯ শে মে বারবার স্মরণ করতে হবে।

জয় বাংলা

তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া, বিভিন্ন সংবাদপত্র



No comments