Header Ads

পশ্চিমবঙ্গে থাকা রেল ডিভিশন গুলির সিংহভাগ জুড়ে থাবা বসাচ্ছে হিন্দি আগ্রাসন


পশ্চিমবঙ্গ একটি ক্যাটেগরি সি রাজ্য যেখানে রাজ্যের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা যা থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোনোরকম নিয়ম অগ্রাহ্য করে রেল হিন্দি আগ্রাসন চালাচ্ছে। 
কিছুদিন আগে আসানসোল ডিভিশনে রেলে বাংলায় ঘোষণা বন্ধ করে দেয়। যদিও কয়েকটি বাংলা ভাষার সংগঠন আন্দোলন করায় তাতে বাংলা ফিরে আসে। আদ্রা ডিভিশনে চলা ডিএমও প্যাসেঞ্জারের মতো সব ট্রেনে শুধুমাত্র হিন্দি এবং ইংরাজিতে সমস্ত নির্দেশাবলী আছে কিন্তু বাংলা রাখা হয়নি যা করা হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে। 
রেলের ভেতরেই বেআইনি সব পোস্টার থাকছে যেমন কোথাও লেখা থাকছে হিন্দি রাষ্ট্রভাষা যা ভারতীয় সংবিধানের কোনো জায়গায় লেখা নেই। কোথাও লেখা থাকছে হিন্দি হ্যায় হামযদিও তখন রেল আছে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে। আবার যেমন মেদিনীপুর স্টেশনে বাংলাকে রাখা হচ্ছে তৃতীয় লাইনে যেখানে বাংলা থাকার কথা প্রথম লাইনে। মেদিনীপুর স্টেশনের নতুন নির্দেশাবলিগুলি শুধুমাত্র হিন্দি এবং ইংরেজিতে লেখা হচ্ছে যা বেআইনি। শালবনী স্টেশনের প্রস্রাবাগারে আবার শুধুমাত্র হিন্দি এবং ইংরাজিতে লেখা হচ্ছে দিব্যাঙ্গজনের জন্য বাংলা অভিধানে যে শব্দের কোনো অস্তিত্ব নেই। চন্দ্রকোনা রোড স্টেশনের গুদামগুলিতেও বাংলা রাখা হয়নি। গড়বেতা স্টেশনের সিঁড়িতে স্বচ্ছ ভারত কথাটা লেখা হয়েছে শুধু মাত্র হিন্দিতে। 
আবার মেদিনীপুর হাওড়া লোকালগুলোতে সাঁতরাগাছিকে উচ্চারণ করা হচ্ছে সন্তরাগাছি। খড়গপুর স্টেশনের লিফ্টেও বাংলাকে রাখা হয়েছে তৃতীয় লাইনে। 
তাছাড়াও ২০১১ এর পর থেকে রেলের টিকিটে বাংলা লেখা হচ্ছেনা যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা। উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়িতে কিছুদিন আগেই কৌশিক সরকার নামে এক যাত্রীকে বাংলা না বলায় টিকিট দিতে অস্বীকার করে সেখানকার রেলকর্মী যদিও পশ্চিমবঙ্গে বাংলায় পরিষেবা দিতে বাধ্য ভারতীয় রেল। কোলকাতা মেট্রোতেও বাংলা ভাষাকে ব্রাত্য রাখা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলকর্মী জানান যে লিখিত এবং অলিখিতভাবে হিন্দি চাপানোর নির্দেশ দিচ্ছে ভারতীয় রেল এবং রাজভাষা কমিটি। কিছু কিছু রেলকর্মীরা ব্যবহারও অত্যন্ত খারাপ করছে স্থানীয় যাত্রীদের সাথে। কোনো কোনো যাত্রী বাংলাতে পরিষেবা চাইলে রেলকর্মীরাই তাঁকে বাংলাদেশী পর্যন্ত বলে দিচ্ছে যা ভারতের বাঙালির জন্য মানহানী ঘটাচ্ছে, যা সম্পূর্ণভাবে জাতিবিদ্বেষী আচরণ। বাংলাভাষী আর পি এফ তো দেখতেই পাওয়া যায়না পশ্চিমবঙ্গে তবে কি রেলে বাঙালি নিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে? এরকমই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বাঙালির মনে। 
আদ্রা ডিভিশনে হিন্দি চাপানোর জন্য বাঙালি কর্মীদেরকে বাধ্য করছে রাজভাষা কমিটি যা সম্পূর্ণ বেআইনি। সংবিধান সব মানুষের সমান অধিকারের কথা বলে যদিও ভারতীয় রেল এসবের তোয়াক্কা না করেই হিন্দি চাপিয়ে চলেছে। 
ভাবনা, বাংলা পক্ষ, আমরা বাঙালী, বাংলা ভাষা একতা মঞ্চের মতো একাধিক সংগঠন বারে বারে এ নিয়ে সরব হচ্ছে। জনমানষে তৈরি হচ্ছে ক্ষোভ যদিও রেলের এসবে কোনো হেলদোল নেই। আপামর বাঙালির উচিৎ নিজের ভাষা সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন হওয়া কারণ নিজের ভাষা রক্ষা করা প্রতিটি বাঙালির অধিকার ও কর্তব্য।

প্রতিবেদন- অমিত দে


No comments