Header Ads

কমেডিয়ান ভারতী সিংয়ের বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্যে নিন্দার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়াতে


বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষ এ দেশে যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য এবার শোনা গেল হিন্দি  কমেডিয়ান ভারতী সিং-এর মুখে। বিগ বস ১৭ পোগ্রামে তাকে বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য করতে দেখা গেল। এ দেশে হিন্দি বলয়ের মানুষ বাঙালিকে যে বহিরাগত মনে করে তার প্রমাণ বারংবার আমাদের সামনে আসছে। 


বিগ বস ১৭-র ঘরে বিশেষ দিনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিল ভারতী সিং ও তার স্বামী হর্ষ। প্রতিযোগীদের সাথে হাসিঠাট্টা করতে দেখা যায় তাদের। আর হঠাৎই ভারতী সিং প্রতিযোগী ঐশ্বর্য শর্মাকে প্রশ্ন করে, "তোমার কোন মিষ্টি পছন্দ?" সে বলে, "বাঙালি মিষ্টি, সন্দেশ।" শোয়ে ঐশ্বর্যর বাচনভঙ্গি ব্যঙ্গ করে ভারতী সিং। এরপরেই সে প্রশ্ন ছোড়ে, "কোন ভারতীয় মিষ্টি পছন্দ?" ঐশ্বর্য শর্মা হাসিমুখে জবাব দেয়, "সন্দেশ ভারতীয় মিষ্টি।" 

ভারতী সিং সন্দেশকে ভারতীয় মিষ্টি বলতে নারাজ। তার এই মন্তব্য পুরোপুরি বাঙালি বিরোধী। তার মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বাঙালি সমাজ।

এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও খাদ্য গবেষক সৌভিক রাজ বলেন, "বাংলা কি ভারতের অংশ নয়? বাঙালি মিষ্টি, ভারতীয় মিষ্টি আবার কী! খাবারের আবার বিভাজন হয় নাকি? বাংলার রসমালাই কদিন আগেই পৃথিবীর সেরা 'ডেজার্টদের' তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানদের সঙ্গে জায়গা পেয়েছে কেসি দাস, বলরাম মল্লিক-রাধারমণ মল্লিক, তারপরেও এঁরা কী ভাবে? সন্দেশ অন্যতম এক সেরা মিষ্টি। ছানার সন্দেশ বাংলার অহংকর। এহেন মন্তব্য প্রমাণ করে ওঁরা কতটা অজ্ঞ। বাংলাকে অপমান করা বিনোদন বানিয়ে ফেলেছেন এঁরা। দেখবেন, বাংলায় এলে এঁদের আবার রসগোল্লা, মিষ্টি দই, সন্দেশ ছাড়া চলে না। তীব্র নিন্দা করছি। এহেন মন্তব্য করা সমীচীন নয়।"

জাতীয় বাংলা সম্মেলনের সভাপতি সিদ্ধব্রত দাস বলেন, "হিন্দিবলয়, আমাদের বাঙালিদের বহিরাগত মনে করে। এর প্রমাণ আমরা বহুবার পেয়েছি। বাংলা ভাষায় কথা বলা, মাছ খাওয়া, আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এগুলো নিয়ে হিন্দিবলয়ের একাধিক নেতা নেত্রী, সাংবাদিক, অভিনেতা-নেত্রীদের বারংবার কটুক্তি, ব্যঙ্গ করতে দেখেছি। এই মন্তব্য সেই প্রবণতারই আরো একটা নিদর্শন। বাংলার মাটিকে গোবলয় লুটের মাল মনে করে যা ১৯৪৭-এ ভারতীয় মহাদেশ ভাগ হওয়ার পর তাদের কোলে এসে পড়েছে। এবং আমরা যতদিন না 'সাহি হিন্দুস্তানি' হতে পারবো ততদিন ওদের চোখে বহিরাগতই থাকবো।"

জাতীয় বাংলা পরিষদের সভাপতি ডা. অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, "বাঙালিরা যে ভাবে হিন্দি বলে বা তাঁরা যে ভাবে আচরণ করে সেটাকে কটাক্ষ করার জন্য অনেক আগে থেকে এই সব শুরু হয়েছে। অনেক দিন আগে ইয়ে জো হ্যায় জিন্দেগী নামক সিরিয়াল হয়েছিল। সেখানে বাঙালিরা কী ভাবে হিন্দি বলে তা নিয়েও মজার ছলে এই মন্তব্য পেয়েছি। সেই সময় এক কংগ্রেস সাংসদ এই নিয়ে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। পরেশ রাওয়াল বাঙালিদের মাছ খাওয়া নিয়ে কটুক্তি করেছেন। এর মূলত একটাই কারণ রাজনৈতিক দলগুলো সব বিশ্বমানব হয়ে গিয়েছে। বাঙালিকে নিয়ে যে ছেলেখেলা হচ্ছে সেই দিকে নজর দিচ্ছেন না। বাঙালি হয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে শেষ করলে তাঁরা বিপদে পড়বেন, এটা রাজনীতিবিদরা বুঝতে পারছেন না।"  

প্রতিবেদন- নিজস্ব সংবাদদাতা


No comments