Header Ads

এক পায়ে পরিবেশ রক্ষায় সামিল সুন্দরবনের 'কোকোনাট ম্যান'


সুন্দরবনের 'ম্যানগ্রোভ ম্যান' ও সুন্দরবনের 'অক্সিজেন ম্যান'-এর কথা তো আপনারা জেনেছেন। কিন্তু সুন্দরবনের 'কোকোনাট ম্যান'-এর কথা কী জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকেই চিনে নিন তাঁকে।


সুন্দরবনে বজ্রপাত রোধে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য লড়াই করছেন 'কোকোনাট ম্যান'। কে এই কোকোনাট ম্যান? এই ব্যক্তিটি হলেন সুকুমার সানা৷ যিনি এক পায়ে জীবনযুদ্ধে সামিল৷ গাছকে ভালোবেসে তিনি যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে মুগ্ধ হয়েছেন সুন্দরবনবাসীরা৷ বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালির বাসিন্দা হলেন সুকুমার সানা৷ 

তিনি কখনও বিদ্যাধরী নদীর চরে ম্যানগ্রোভ, কখনও বিদ্যাধরী নদীর বাঁধে নারকেল গাছের চারা ও তালের বীজ রোপণ করে চলেছেন। ঝড়খালি সবুজ বাহিনী নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তিনি একজন স্বেচ্ছাসেবক। তাঁর কাজ দেখে এগিয়ে এসেছেন ঝড়খালির বহু গৃহবধূ। তাঁর তত্ত্বাবধানে ৪৫ জন মহিলা কাজ করছেন। 

২০০০ সালে পাওয়ার ট্রেলার নিয়ে চাষ করার সময় কোনো কারণে একটি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। যে দুর্ঘটনায় তিনি নিজের একটি পা হারান। তারপর ক্রাচের ওপর ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে তিনি প্রচুর পরিমাণে নারকেল গাছ লাগাতে আরম্ভ করেন৷ ঝড়খালির সবুজ বাহিনী তাঁকে নানাভাবে সাহায্য করছে। 

ভূমিক্ষয় ও বজ্রপাত রোধে নারকেল গাছের বড় ভূমিকা রয়েছে। সুন্দরবনের সোদা মাটির নোনা জলে উপযুক্ত নারকেল গাছের চারা৷ তাই তিনি প্রচুর পরিমাণে নারকেল গাছের চারা সংগ্রহ করে অজস্র নারকেল গাছের চারা রোপণ করেছেন। এক পায়ে দাঁড়িয়ে নারকেল বৃক্ষ রোপণ করে তিনি হয়ে উঠেছেন 'কোকোনাট ম্যান'। তিনি নিজের পা হারানোর সময় ভেবেছিলেন তাঁর জীবনটা ছারখার হয়ে গেল বোধহয়। আর কোনো বাঁচার আশা নেই তাঁর জীবনে। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। সুন্দরবনের পরিবেশকে বাঁচাতে অসম লড়াইতে সামিল হন তিনি। আজও সেই লড়াই অব্যাহত।    

এবছর ২৬ শে ও ২৭ শে মে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যাধরী নদীর পাড়ের ভাঙন আটকাতে নদীর বাঁধের ওপর তিনি প্লাস্টিক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঝড় ও বন্যার ফলে প্রতি বছর সুন্দরবনে বহু গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। জলের তোড়ে ভেসে যায় চাষের জমি। এই চাষের জমিতে যাতে জল জমতে না পারে তার জন্য ভূমিক্ষয় রোধ করা প্রয়োজন। এই প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে পরিশ্রম করে চলেছেন 'কোকোনাট ম্যান'। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments