Header Ads

নদীয়া জেলার প্রথম মহিলা হিসেবে এভারেস্টে পা রাখতে চলেছেন রুম্পা দাস


পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট। ৮,৮৪৮.৮৬ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট এই শৃঙ্গে পা রাখা মোটেও সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। এভারেস্টের শীর্ষে পৌঁছাতে গেলে নানান ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উতরাই এর সম্মুখীন হতে হয় পর্বতারোহীদের। যে-কোনো সময় এখানে ঘটে যেতে পারে মৃত্যু। বহু পর্বতারোহী এভারেস্ট এক্সপ্লোর করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আবার অনেকে এভারেস্টে পা রেখে সাফল্যের সঙ্গে নিজেদের ঘরে ফিরে এসেছেন।
 

এখন প্রতিবছর কোনো না কোনো বাঙালি এক্সপ্লোরার এভারেস্ট যাচ্ছেন, সফলও হচ্ছেন তাতে। আসলে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে বাঙালির বরাবরই ভালো লাগে। এবার নদীয়া জেলার প্রথম মেয়ে হিসেবে এভারেস্টে পা রাখতে চলেছেন রানাঘাটের রুম্পা দাস। গত বছরই যাওয়ার কথা ছিল তার কিন্তু করোনার জন্য আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তাই এই বছরই এভারেস্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন রুম্পা দাস। 

প্রথম এভারেস্ট অভিযানের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে সফল অসামরিক অভিযানের ১১ বছর পর আরো একবার এভারেস্টের পথে এ রাজ্যেরই একজন বাসিন্দা। রুম্পা দাস পেশায় একজন শিক্ষিকা। তিনি কুপার্স কলোনি হাইস্কুলে ইংরেজি পড়ান৷ তার বর্তমান বয়স ৪০ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাউন্টেনিয়ারিং এ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন৷ 'মাউন্টেনার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ কৃষ্ণনগর' এর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এই এক্সপিডিশনের কথা।  

'মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন অফ কৃষ্ণনগর' বা 'ম্যাক' এ প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তিনি একের পর এক কঠিন শৃঙ্গে পা রেখেছেন। পাঁচ বছরে তিনি সাতটি শৃঙ্গ এক্সপ্লোর করেছেন। যে অবদানের জন্য তিনি সংস্পর্শে আসেন অসামরিক ক্ষেত্রে প্রথম বাঙালি এভারেস্টজয়ী বসন্ত সিংহ রায়ের। তারপর নিজেকে তৈরি করেছেন ভেঙে-গড়ে। এখন তার সামনে এক বৃহৎ লক্ষ্য। 

পাহাড়ে ট্রেকিং, অ্যাডভেঞ্চার ও খেলাধূলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল রুম্পা দাসের। কিন্তু তার মা-বাবা মেয়ের এমন আগ্রহে বিন্দুমাত্র উৎসাহী নন। প্রাণের মোহ ত্যাগ করে পর্বতারোহণ, রক ক্লাইম্বিং ও ট্রেকিং এ মেয়ে অংশ নেবে এটা তারা কোনোদিনই চাননি। তবুও তিনি হাল ছাড়েন নি। প্রায়শই তিনি তার মা-বাবাকে বোঝাতেন ব্যাপারটা। প্রতিদিন তিনি দেশ-বিদেশের ভ্রমণ ও অভিযানের নানান বই পড়ে অ্যাডভেঞ্চারারের স্বাদ মেটাতেন তখন। সেসব এখন অতীত। এখন দেশের সফল পর্বতারোহীদের মধ্যে তিনিও একজন। 

এভারেস্টে যেতে হলে খরচ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। এতো বিশাল পরিমাণ টাকা জোটাতে কিছুটা হিমশিমও খেতে হয়েছে তাকে। যদিও এই টাকার বন্দোবস্ত ক্রাউড ফান্ডিং এর মাধ্যমে তিনি করে ফেলেছেন। ব্যাঙ্ক ও সমবায় থেকে তিনি ১০ লক্ষ টাকা ঋণ নেন। 'ম্যাক' দিয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। এরপর কাছের মানুষদের সঙ্গে টাকার ব্যাপারে যোগাযোগ করলে অনেকেই তাকে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। গত ৭ ই এপ্রিল তিনি কাঠমান্ডু থেকে রওনা দিয়েছেন এভারেস্টের উদ্দেশ্যে। প্রায় ৬০ দিন ধরে যাত্রা করবেন তিনি। এক রাশিয়ান পর্বতারোহী দলের সঙ্গী হতে চলেছেন তিনি। এ বছর পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র মহিলা হিসেবে রুম্পা দাস এভারেস্টে পাড়ি জমাচ্ছেন। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments