Header Ads

সৌদি আরবে জয়যাত্রা করতে পারে আলিপুরদুয়ারের ব্ল্যাক রাইস


ক্যান্সাররোধী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত এক ধরণের চাল হলো ব্ল্যাক রাইস বা কালো চাল৷ সাদা চালের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর চাল হলো কালো চাল। এই চালে শর্করার পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে কম। কালো চালে সাদা চালের তুলনায় আয়রন ও ভিটাবিন-বি এর পরিমাণ বেশি। কালো চালে উপস্থিত পুষ্টি উপাদানগুলি হল ফ্যাট ৩%, কার্বোহাইড্রেট ১১%, আঁশ ৫%, ভিটামিন এ ২% এবং আয়রন ৬%। কালো চালের উপকারীতার জন্য পশ্চিমবঙ্গে এর চাহিদা মোটামুটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। 


কালো চালের বাজার মূল্য সাদা চালের থেকেও বেশি। আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন গ্রামে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে কালো চালের চাষ করা হচ্ছে। আমন ধান বোনার মরসুমে শ্রাবণ মাসে চাষ হয়ে থাকে এই কালো চালের। শ্রাবণ মাসে এই চাল চাষের অন্যতম কারণ হলো শ্রাবণে তাপমাত্রা অনেকটা কম থাকে তাই ফুল ফোটার সময় ফুলগুলো নষ্ট হয়না। আলিপুরদুয়ারের গ্রামগুলোতে মণিপুরী জাতের  কালো চাল চাষ করা হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের চাষীরা কালো চাষে ভালো ফলন পাচ্ছেন।  

ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারের কালো চাল রাজ্যের সীমানা ছাড়িয়ে কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও দিল্লিতে ভালো বাজার তৈরি করে ফেলেছে। দেশীয় জাতের এই চালে অগাধ পুষ্টিগুণ থাকার জন্যই এ রাজ্যের পাশাপাশি ভিন রাজ্যের লোকেরাও এই চাল খাচ্ছেন। বাংলার কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচন করে চলেছে আলিপুরদুয়ারের ব্ল্যাক রাইস। 

কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় রাজ্য কৃষি দপ্তর এই ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে। বাজারের চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাজ্য কৃষি দপ্তর এই চাল চাষের এলাকা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছে৷ ব্ল্যাক রাইসের বৃহত্তর বাজার ধরতে এবার সৌদি আরব পাড়ি দিতে পারে এই চাল৷ শোনা যাচ্ছে, কলকাতার এক রপ্তানিকারক সংস্থা সৌদি আরবে এই চাল রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।   বিদেশের মাটিতে কেবল একবার বাজার ধরতে পারলেই কালো চালকে কেন্দ্র করে বাংলাতে কৃষিনির্ভর বাণিজ্যের বহর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

পরীক্ষামূলক ভাবে আলিপুরদুয়ারের গ্রামগুলোতে ব্ল্যাক রাইস চাষের সাফল্য কৃষি দপ্তরের মনোবল বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। আরো বহুল সংখ্যক চাষীরা যাতে এই চাষে উদ্যোগী হন তাই রাজ্য কৃষি দপ্তর চাষীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই ধানের বীজ প্রদানে উদ্যোগী হয়েছে। পুরোপুরি জৈব পদ্ধতিতে এই চালে চাষ হচ্ছে। উঁচু ও মাঝারি জমি এই ধানের জন্য যথাযথ। এই ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বেশি। এমনকি এই চাল পাইকারি বাজারে ১০০ টাকা কেজি দরে অনেক কৃষক বিক্রি করছেন। বিদেশে রপ্তানির জন্য এখনও পর্যাপ্ত উৎপাদন শুরু না হলেও চলতি বছর থেকেই এর উৎপাদন বাড়াতে চাষীরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। 

প্রতিবেদন- সুমিত দে

No comments