Header Ads

করোনার যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতির মাঝে আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পে ফের মৃত্যু হলো এক বাঙালির


সারা বিশ্বজুড়ে মানুষের মৃত্যু মিছিল। একটা রোগ কেড়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ। যে রোগের নাম  কোভিড ১৯ করোনা। যার প্রকোপের হাত থেকে বাঁচতে গোটা দেশজুড়ে জারি রাখা হয়েছে লকডাউন। সকল মানুষই এখন গৃহবন্দী। বাড়িতে বসে নানান কাজের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে প্রতিটি মানুষ। একদিক মৃত্যু আতঙ্ক অন্যদিকে মানুষের মধ্যে কাজ করছে কাজ হারানোর ভয়। কেউ জানেনা লকডাউন উঠতে এখনও কতদিন সময় লাগবে। কেমন যেন একটা চাপা চিন্তা ভাবাচ্ছে সকল মানুষকে। 


এরই মাঝে ডিটেনশন ক্যাম্পে  ফের বাঙালির মৃত্যুর খবর ভেসে এলো আসাম থেকে৷  বন্দিশালাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩০। করোনাতে যেখানে প্রতিটি জায়গাতে সতর্কবার্তা ছড়ানো হচ্ছে সেখানে ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি নেই কোনো বন্দী বাঙালির। যারা নাগরিকত্ব প্রমাণে বারবার ব্যর্থ। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের নোটিসে কেন্দ্র ও অসম সরকারকে বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হলেও বন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন্দ্র  ও অসম সরকার। অথচ আসামে জেলবন্দী কয়েদি ও খুনীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা একেবারেই অমানবিক কাজ।

অসম সরকারের কাছে দাম ফুরিয়ে যাচ্ছে বাঙালির। বাঙালির জীবন নিয়ে তারা শুরু করেছে ছেলেখেলা। লকডাউনের মাঝেও বন্ধ হয়নি তাদের অন্ধ রাজনীতি। যে জাতি দেশের মানুষকে স্বাধীনতা দিল আজকে সেই জাতিকে নাগরিকত্বের প্রমাণ না দেখাতে পারার জন্য মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। কয়েদিদের মতো কষ্টকর জীবন কাটাতে হচ্ছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী নিরীহ বাঙালিদের জীবনে নেমে এসেছে দুঃখের কালো অন্ধকার। তারা ক্যাম্পে বসে অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছে। দুমুঠো ভালো খাবারও জুটছে না তাদের। বলতে গেলে তাদের সুখের জীবন আজ শেষের পথে। 

যে বাঙালি মানুষটি কাল মারা গেল হয়তো সে আসামে স্বপ্ন দেখেছিল নতুন করে বাঁচার। হয়তো সে মানুষটি কালও জানতো না তার জীবনটা ডিটেনশন ক্যাম্পে শেষ হবে। তার পরিবার আজ কেঁদে ভাসাচ্ছে নিজেদের কোল। যাদের কান্না কেউ বুঝবে না। তাদের কান্না মোছাতেও কেউ আসবে না। হাজার বাঙালি মারা যাবে ডিটেনশন ক্যাম্পে তবুও কেউ বুঝবে না তাদের জীবনের মূল্য। হাজার মৃত্যুমিছিলের পরও হয়তো প্রতিটি ভোট মানুষ তাদেরকেই দেবে। কারণ পুরো ভারত জুড়ে আজ চলছে মানবিকতার অবক্ষয়। বিষয়টা অনেকটা কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর উলঙ্গ রাজা কবিতার মতো। যেখানে রাজা উলঙ্গ তবুও মানুষ বাহবা জানাচ্ছে তাকে। 

আজ অনেক মানুষের কাছে মানবিকতার থেকে বড় হয়ে উঠছে রাজনীতি। দেশপ্রেম এখন পরিণত হয়েছে কোনো নির্দিষ্ট পার্টিগত প্রেমে। কবে আবারো ফিরবে দেশজুড়ে মানবিকতা কেউ জানেনা। তাই বাঙালিদের উচিৎ পুরো ভারতের কথা চিন্তা না করে বাঙালির কথা চিন্তা করা। কারণ আজকে বাঙালিকে কোণঠাসা করার বৃহৎ চক্রান্ত চলছে। তার অবসান ঘটানো বাঙালির একান্ত প্রয়োজন। নাহলে বাঙালির ভবিষ্যৎ সর্বনাশা৷ 

প্রতিবেদন- লিটারেসি প্যারাডাইস ইনফরমেশন ডেস্ক


No comments