Header Ads

তৃপ্তায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের দ্য ফেড আউট সিনেমা পাড়ি দিল নাইজিরিয়া


জম্বু কাশ্মীর বলতে আমরা অনেকে শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বা ধর্মীয় স্থান হিসেবেই হয়তো জানি। অনেকে আবার ভারত পাকিস্তান অস্থিরতার  কারণে এই জায়গাটার প্রকৃত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের খবর রাখিনা। কিন্তু, এই অংশেই রয়েছে বাল্টিকদের বাসস্থান, এখানে রয়েছে প্রাচীন আর্য ও মোঙ্গলয়েড সভ্যতার নিদর্শন। এই অংশে বর্তমান লাদাখি সংস্কৃতি, নুব্রা উপত্যকার সংস্কৃতি, গ্রাম্য পহেলগামের প্রাচীন আর্য সভ্যতার নিদর্শন। এই সব অনেক সংস্কৃতি ভারতের প্রধান অংশের সাথে এখনও বিচ্ছিন্ন। বাল্টিক সংস্কৃতি বা কাশ্মীরে ছড়িয়ে থাকা এরকম অনেক সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে তা নিয়েই তৃপ্তায়ণ চট্টোপাধ্যায় এবং ওনার টিম বানিয়েছেন দ্য ফেড আউট সিনেমাটি। 












এই ডকুমেন্টারি সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে ইংরেজিতে যা ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে। দ্য ফেড আউটের পরিচালক তৃপ্তায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের কথায় কাশ্মীর অংশে লুকিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য, বিভিন্ন জাতির ইতিহাস এমনকি টেথিস সাগর উৎপত্তির সময় তৈরি হওয়া খাঁজগুলিও স্পষ্ট। তাই এসব জিনিস দেশের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন এগুলো ভূগোল বা ইতিহাসের সাথে পড়ানো হয়না। এসব লুকিয়ে থাকা তথ্য গুলি আমাদের জানা প্রয়োজন।

এই সিনেমার সমগ্র অংশ জুড়ে দেখানো হয়েছে বাল্টিক সংস্কৃতি, নুব্রা উপত্যকায় কারাকোরাম রেঞ্জের চারপাশ থেকে প্রাচীন কালে চীন, কিরগিজিস্তান ও তাজিকিস্তানের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা মোঙ্গলদের মিশ্র সংস্কৃতি, লাদাখের লে শহরের মানুষদের সংস্কৃতি, বাড়ি ঘরের সাথে বিভিন্ন সভ্যতার কি কি নিদর্শন আছে এরকম বিষয়। নুব্রা উপত্যকায় থাকা ব্যাকট্রিয়ান উট থেকে সহজেই বুঝে নিতে হয় যে এই অংশের সাথে এককালে কাজাখস্তান বা উজবেকিস্তানের যোগাযোগ ছিল। তাছাড়া মোঙ্গোলয়েড সভ্যতার মতো কাশ্মীরের পশমিনা ছাগলের উপস্থিতী এরকম অনেক তথ্যে ভরপুর এই সিনেমাটি। 












সিনেমা নির্মাতারা এই সিনেমাতে যে কথাটি বার বার তুলে ধরেছেন তা হল কাশ্মীরের শহর গুলিতে এখনও লুকিয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতা এবং বর্তমানের আধুনিক সভ্যতার মিশ্রণ। প্রাচীন কালের বাণিজ্য এবং ভারতের সাথে সেন্ট্রাল এশিয়ার যোগাযোগ, সংস্কৃতির আদান প্রদান সম্ভাব্য যে পথে হতো তা দেখানো হয়েছে এই সিনেমাটিতে। গ্রিক সভ্যতা এবং তিব্বতের সাথে সামঞ্জস্য থাকা জায়গাগুলিও খুঁজে বের করেছেন এই সিনেমার নির্মাতারা। 

সিয়াক নদীর তীর, সিন্ধু নদীর তীর, টেথিস হিমালয়, সিয়াচেন, কারাকোরাম রেঞ্জ,পহেলগাম, নুব্রা নদী, নুব্রা উপত্যকা, প্যানগং হ্রদ, খারদুংলা গিরিপথ, লে শহর, কারগিলের বিভিন্ন অংশে হয়েছে এই সিনেমার শ্যুটিং । 

ট্রিপভিল প্রোডাকশন প্রযোজিত এই সিনেমায় সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন স্টেনজিং শিংগে,প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্টের কাজ করেছেন ইলোরা চ্যাটার্জী, ন্যারেটরের কাজ করেছেন জম্বু ও কাশ্মীর রাজ্যের বাসিন্দা জাহির আব্বাস এবং গবেষণার কাজ করেছেন আহমেদ কাচো। 

এই সিনেমাটি নাইজিরিয়ার লাগোসে অনুষ্ঠীত আফ্রিকান ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০১৮ তে মনোনীত হয়েছে। এরকম আরো অনেক ভালো ভালো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে ট্রিপভিল প্রোডাকশন। পরের প্রজেক্টের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন অনেক দর্শক। দর্শকদের প্রত্যাশা এই সিনেমাটি ছড়িয়ে যাবে লক্ষ লক্ষ দর্শকের কাছে।

[প্রতিবেদন-অমিত দে]


No comments