Header Ads

মা-হারা শিশুদের মাতৃদুগ্ধের যোগান দিতে তথ্যভাণ্ডার বানাচ্ছেন দুই বাঙালি তরুণী


করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে সদ্য মা হওয়া মহিলাদের ওপর। বহু সদ্য মা হওয়া মহিলারা করোনা সংক্রমণের শিকার। অনেক ক্ষেত্রে তাদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে। এর ফলে দুগ্ধপোষ্য শিশুরা চরমতর সমস্যায় পড়ছে। 


সদ্যোজাত শিশুদের প্রধান খাবার হলো সুষমজাতীয় খাদ্য। এক্ষেত্রে মাতৃদুগ্ধের বিকল্প আর কিছু নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো যে সকল সদ্যোজাত শিশুদের মায়েরা মারা যাচ্ছে তাদের খাবারের কী হবে? তারা তো সুষম খাবার না পেলে মারা যাবে। তাই এ সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এলেন কলকাতার দুই তরুণী। 

হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গবেষক বৈদেহী দাস   ও টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের ছাত্রী মণিময়ী চক্রবর্তী নিয়েছেন এক অসাধারণ উদ্যোগ৷ মাতৃদুগ্ধ দানে ইচ্ছুক মায়েদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি এবং প্রথাগত ট্যাবু ভেঙে যাতে সকলে এগিয়ে আসেন সদ্যোজাতের সাহায্যের জন্য, সেই আবেদন নিয়েই সোশ্যাল  মিডিয়ায় প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গড়ে তুলতে চাইছেন ব্রেস্ট মিল্ক নেটওয়ার্ক। যাতে মাতৃহারা শিশুর পরিবার সহজেই খুঁজে পেতে পারেন দাতাদের। 

সোশ্যাল মিডিয়াতে সম্প্রতি একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে তা হলো-- বাঁকুড়ার এক ২০ দিনের শিশুর মা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।  বাচ্চাটিকে কোনও প্রসূতি মায়ের স্তন্যপান করোনার আবেদন জানিয়ে একটি ইমেলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে সদ্যোজাতের বাবার তরফে। এই পোস্টটি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। যা পড়েই বৈদেহী দাস ও মণিময়ী চক্রবর্তী সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা ব্রেস্ট মিল্ক নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন। 

দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এই সমস্যাটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাতে এই সমস্যা রোধে উদ্যোগ নিয়েছেন বৈদেহী দাস ও মণিময়ী চক্রবর্তী। কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে এমন ব্যবস্থা রয়েছে। কয়েক বছর আগেই তা চালু হয়েছে। তবে ঐ ব্যবস্থা সেখানে ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য চালু বলে জানা গিয়েছে।  

ঐ দুই তরুণীর এই উদ্যোগকে সফল করা মোটেও সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। এ কাজে নানান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যানবাহনের বিশেষ সমস্যা হলো এর অন্যতম একটি দিক৷ মহামারীর পরিস্থিতিতে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে দুগ্ধ সংগ্রহ করা বা দান করা দুটোই কার্যত অসম্ভব। অতএব গোটা বাংলার অঞ্চল ভিত্তিক আলাদা আলাদা তথ্যভাণ্ডার তৈরি করাই লক্ষ্য ঐ দুই তরুণীর। এর জন্য দরকার আরও বেশি সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক।  

প্লাজমা দানের মতো মাতৃদুগ্ধ দানের বিষয়টি সহজ হবে কিনা, তা সময়ই বলবে। যদিও সামাজিক লজ্জা কাটিয়ে অনেক প্রসূতিই ফোন করেছেন। অনেকে জানিয়েছেন, পাম্প করে মাতৃদুগ্ধ পাত্রে ভরে দান করতে চান৷ আবার সরাসরি শিশুকে দুগ্ধপান করাতেও কেউ কেউ রাজি। তাঁদের প্রত্যেকের নম্বর, মেডিক্যাল তথ্য নথিবদ্ধ করছেন দুই তরুণী।  

তবে এই কাজ সবে তাঁরা শুরু করেছেন। কীভাবে এগোবেন, তা এখনও ঠিক করেননি। এদিকে, এই কর্মসূচীতে চিকিৎসকদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কারণ কোনও শিশুকে অন্য কোনও মা খাওয়াতে চাইলে তা কতদূর সম্ভব বলতে পারবেন চিকিৎসকেরা।  

প্রতিবেদন- সুমিত দে


No comments